২৩/০৫/২০২৫, ২০:৩৬ অপরাহ্ণ
29 C
Dhaka
২৩/০৫/২০২৫, ২০:৩৬ অপরাহ্ণ

অভিশংসিত হান ডাক-সুকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট পদে ফেরাল আদালত

দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত সোমবার (২৪ মার্চ) দেশটির অভিশংসিত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি তিন মাস পর পুনরায় সেই পদে ফিরলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে সামরিক আইন জারির কারণে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সংসদে অভিশংসিত হওয়ার পর হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু এর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে তাকে নিজেই অভিশংসিত করা হয়, যা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে এক বিশাল সংকট সৃষ্টি করে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আদালত সাত-এক ভোটে হানের অভিশংসন বাতিল করার রায় দিয়েছে। বিচারপতিরা বলেন, হানকে অভিশংসন করার জন্য পর্যাপ্ত আইনগত ভিত্তি ছিল না এবং তিনি কোন সংবিধান বা আইন লঙ্ঘন করেননি। পাঁচ বিচারপতি হানের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাবকে বৈধ না হলেও, এটিকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছেন। এর মধ্যে দুই বিচারপতি জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হানকে অভিশংসন প্রস্তাব আদৌ অবৈধ ছিল, কারণ সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতা এটি অনুমোদন করেননি।

হান ডাক-সু ২০২২ সালের মে মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে, সামরিক আইন জারি করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর তিনি নিজেও অভিশংসিত হন। এই অভিশংসনটি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যেখানে একের পর এক শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিশংসন এবং পদত্যাগের চাপ ছিল।

অভিশংসিত হান ডাক-সু প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তিনি আদালতের রায়ের পর বলেন, “সাংবিধানিক আদালতের বিজ্ঞ সিদ্ধান্তের জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” তিনি তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বরখাস্ত থাকার সময় কঠোর পরিশ্রমের পর, আমরা একসাথে কাজ করব যাতে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত এবং বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়।”

অন্যদিকে, বিরোধী এমপিরা অভিযোগ করেছিলেন যে, হান ইউনের অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আর এই কারণে, সংসদে বিতর্কের পর তাকে অভিশংসিত করা হয়। একদিকে, সামরিক আইন ঘোষণা এবং তার পরবর্তী অভিশংসন ঘটনাগুলি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে এবং দেশে নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি করেছে।

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে এই সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে গণ্য হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই রায় শুধুমাত্র হানের জন্য নয়, বরং দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাপ্তির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিচারপতিরা হান ডাক-সুর অভিশংসন বাতিলের মাধ্যমে দেশের সংবিধান এবং আইনকে সম্মান জানিয়েছেন, যা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

রয়টার্স আরও জানায়, দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র হওয়ায়, দেশটির রাজনীতির অস্থিরতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই রায়ের পর, হান ডাক-সু আশা করছেন, দেশটি তার নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা ফিরে পাবে এবং ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।

পড়ুন: চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ২৮ মার্চ

দেখুন: কী কী ক্ষমতা আছে রাষ্ট্রপতির? 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন