কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় চলমান পরিস্থিতি শান্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আলোচনায় বসার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও, তিনি এই দলে ১৪ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতাদের যুক্ত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে গণভবনে এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নবান ও সহনশীল থাকতে হবে। একইসঙ্গে তিন নেতা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ১৪ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতারাও এ দলে যুক্ত হবেন।’
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করে জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা তাদের দাবির সঙ্গে একমত। এরই মধ্যে তাদের দাবি মেনে কোটা সংস্কার করা হয়েছে। হতাহতের ঘটনায় সঠিক তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার হবে। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তাদের কথা শুনবেন। এ বিষয়ে দলীয় সভাপতি ও জোটনেত্রীকে রিপোর্ট করবেন।
তারা আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে, করুক। তবে, তৃতীয় পক্ষ যেন তাদের ব্যবহার করে সুবিধা আদায় করতে না পারে, সেদিকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। শিক্ষার্থীদের ওপর কেউ যেন কোনো অন্যায় আচরণ না করে, সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পড়া-মহল্লায় সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে দলটির সভাপতি ছাড়াও অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুর নাহার চাপা, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গতকাল সারা দেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমিছিল করেছে। গণমিছিলে কবি-সাহিত্যিক, শিক্ষক চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন।