চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের ত্রাস ও মাদক কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা ওমর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে চরবাগডাঙ্গার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওমর আলী চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চাকপাড়া গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, ওমর আলী আওয়ামী লীগ আমলে চরাঞ্চলের ত্রাস ও মাদক কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত পায়। তিনি চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে ককটেলবাজি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্থ সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। তার ভাই মো. আব্দুল লতিব ঢাকার শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছাত্র-জনতার উপর হামলা মামলার আসামি। তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে চরবাগডাঙায় আত্মগোপনে রয়েছেন। সম্প্রতি চরবাগডাঙ্গায় ককটেলবাজির একাধিক ঘটনার অন্যতম আসামি ওমর আলী। চরাঞ্চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ওমর গ্রুপের আধিপত্য। তিনি মাদকের গডফাদার উপজেলা তাঁতী লীগ সভাপতি মো.নুরুল ইসলাম, মাদক কারবারি জুয়েল রানাসহ বেশ কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এদিকে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি হামলার শিকার হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স আব্দুল হাকিম পিন্টু। ২৩ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকান্ডে ওমর সিন্ডিকেট জড়িত থাকলেও পরিকল্পিতভাবে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ হত্যাকান্ডে নিহতের বাবা মো. হুমায়ুন বাদী হয়ে গত ২৪ জানুয়ারি সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে নিহতের স্ত্রী পারভিন বেগম বাদী হয়ে ৪ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রয়াজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চরবাগডাঙ্গা ইউপি সদস্য মো. জুয়েল রানাকে। অন্য আসামিরা হলেন, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ওমর আলী, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, মতিউর রহমান, মানিক আলী, নাজমুল হক গুধা, মো. সুমন, জাহাঙ্গীর আলী, ইসমাইল হোসেন ও মোশাররফ হোসেন মুসা। আসামিরা সবাই চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা ওমর গ্রুপের লোক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পড়ুন: রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের ২০ নেতাকর্মীর জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
দেখুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক, কেন চান না ফখরুল?
ইম/