ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে নির্মিত দুটি প্রতীকী মোটিফ আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। পুড়ে যাওয়া দুটি মোটিফের একটি ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ এবং অন্যটি ছিল ‘শান্তির পায়রা’। এর মধ্যে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে, আর ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, ভোর পৌনে পাঁচটা থেকে পাঁচটার মধ্যে আগুনে লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সময় দায়িত্বে থাকা মোবাইল টিম ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য গিয়েছিলেন। সে সময়েই অজ্ঞাত কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম জানান, আগুনে যে দুটি মোটিফ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ হিসেবে নির্মিত হচ্ছিল।
এবারের বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। সেই প্রতিপাদ্যের আলোকে ২০ ফুট উচ্চতার ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি বানানো হয়। বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি এই মোটিফে এক ভয়ংকর নারীর মুখাবয়ব তুলে ধরা হয়েছিল—যার মাথায় খাড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশাল নাক ও ভয়ার্ত চোখ।
এই মোটিফটি নিয়েই সামাজিক মাধ্যমে আগে থেকেই বিতর্ক চলছিল। অনেকেই এটিকে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপক হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন, যদিও চারুকলা অনুষদ কখনোই এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয়নি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা হতে পারে, যা মতপ্রকাশ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি হুমকি। তবে নতুন করে মোটিফ বানিয়ে শোভাযাত্রা যথাসময়ে আয়োজনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন চারুকলার সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
পড়ুন: ফেসবুকে শোভা পাচ্ছে গঠনমূলক মন্তব্য, রয়েছে সামাজিক অসঙ্গতিও |
দেখুন: মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে নিন্দা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের
ইম/