স্বেচ্ছায় রক্তদান এক মহৎ কাজ। রক্তের অভাবে একজন ব্যাক্তি যেমন জীবন হারাতে পারেন তেমনি রক্ত দানের মাধ্যমে জীবন বাঁচানোও সম্ভব। তাই জীবন বাঁচাতে রক্তদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর ১৪ জুন সারা বিশ্বে ‘রক্তদাতা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
১৪ জুন ‘রক্তদাতা দিবস’ উদযাপনের পিছনে একটি বিশেষ কারণ রয়েছে। নোবেল বিজয়ী জীববিজ্ঞানী ও চিকিৎসক কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০০ সালে প্রথম রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন। তাঁর এই অনন্য আবিষ্কারের জন্য তিনি ১৯৩০ সালে নোবেল পুরুস্কার পান। তাঁকে বলা হয় ‘ফাদার অব মডার্ন ব্লাড ট্রানসফিউশন’। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার জন্মদিনকে ‘বিশ্ব রক্তদাতা দিবস’ হিসেবে পালন করার জন্য বেছে নেয়।
আন্তর্জাতিকভাবে এবছর বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ আলজেরিয়া। ২০০৪ সালে দিবসটি প্রথম পালিত হয়। এবছর রক্তদাতা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘রক্ত দান করুন, দান করুন প্লাজমা, যতবার সম্ভব গ্রহণ করুন জীবন বাঁচানোর এ অনন্য সুযোগ।’
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, রক্তের কোনো বিকল্প নেই। নানা কারণে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সাধারণত থ্যালাসেমিয়া রোগী, রক্তস্বল্পতা, প্রসূতির রক্তক্ষরণ, অগ্নিদগ্ধ রোগী, বড় অপারেশন, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীর রক্তের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের দেশে বছরে রক্তের চাহিদা আনুমানিক ৮-১০ লাখ ব্যাগ। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় এ চাহিদা একেবারেই নগণ্য। তবে এখনো স্বেচ্ছা রক্তদানে ঘাটতি রয়েছে। ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই স্বেচ্ছা রক্তদাতা বৃদ্ধি করে এ চাহিদা মেটানো সম্ভব।
তারা আরও বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি যে কোনো ব্যক্তি প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন। নিয়মিত রক্তদানে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণেরও বেশি কমে যায়। তারপরেও বেশিরভাগ মানুষ রক্তদানে অনাগ্রহী।