২৩/০৫/২০২৫, ২০:০৭ অপরাহ্ণ
29 C
Dhaka
২৩/০৫/২০২৫, ২০:০৭ অপরাহ্ণ

ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধে ট্রাম্পের প্রচেষ্টা আটকে দিলেন বিচারক

যুক্তরাষ্ট্রের বহুল পরিচিত আন্তর্জাতিক সংবাদ পরিষেবা ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) বন্ধের প্রচেষ্টাকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন এক মার্কিন বিচারক। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই ও বাজেট কাটছাঁটের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা চালানো হয়। তবে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের জেলা বিচারক রয়স ল্যাম্বার্থ এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন এবং ভিওএ-সহ আরও দুটি রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদমাধ্যমকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভয়েস অব আমেরিকার ১৩০০ জনের বেশি কর্মীকে গত মার্চে ছুটিতে পাঠানো হয় এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে অন্তত ১০০০ জন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভিওএ “বামপন্থি পক্ষপাতিত্ব” করে এবং যথেষ্ট “আমেরিকানপন্থি” নয়। তবে আদালতে ভয়েস অব আমেরিকার আইনজীবীরা বলেন, সংস্থাটি সত্যনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী।

বিচারক ল্যাম্বার্থ তাঁর রায়ে উল্লেখ করেন, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ছিল “অবিবেচনাপ্রসূত ও তড়িঘড়ি করে নেওয়া”, যা সংস্থার ৮০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সংবাদ পরিবেশনে ব্যাঘাত ঘটায়। তিনি বলেন, প্রশাসনের এ ধরনের আচরণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রচার আইন ও কংগ্রেসের অর্থ বরাদ্দ নীতিমালার লঙ্ঘন।

এই রায়ে রেডিও ফ্রি এশিয়া ও মিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্কসের কর্মীদেরও পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এবং ওপেন টেকনোলজি ফান্ড-এর ক্ষেত্রের একই আবেদন নাকচ করেছেন বিচারক।

ভিওএ-এর হোয়াইট হাউস বিষয়ক ব্যুরো প্রধান প্যাটসি উইডাকুসওয়ারা বলেন, “এই রায় আমাদের স্বাধীন সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই আমাদের কংগ্রেশনাল দায়িত্বে ফিরতে এবং আবারও সত্য, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ সংবাদ পরিবেশন করতে।”

ভিওএ প্রতিষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি প্রচারণার পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য। এরপর স্নায়ু যুদ্ধকালীন সময়েও এটি বিশ্বের নানা প্রান্তে মার্কিন স্বার্থ তুলে ধরার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যদিও সংস্থাটি প্রায়ই রাষ্ট্রীয় প্রোপাগান্ডা প্রচারের অভিযোগে সমালোচিত হয়, তবুও এটি এখনও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা রক্ষার কথা বলে আসছে।

২০২৫ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফের দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ভিওএ-এর শীর্ষ পদে নিজের রাজনৈতিক মিত্র ক্যারি লেককে নিয়োগ দেন। লেক ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয়কে ‘চুরি’ বলে দাবি করা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।

বিচারকের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবিধানিক অধিকার ও প্রশাসনিক ক্ষমতার সীমারেখা বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পড়ুন: ইসরাইলসহ সারা বিশ্বে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে এর মুল হোতা আমেরিকা : ইসলামী আন্দোলনের আমীর

দেখুন: ইলন মাস্ককে নিয়ে ভংয়কর তথ্য ফাঁস, ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চরমে?

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন