রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত ২৫ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) রাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যার ফলে কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হন, তাদের মধ্যে ছয় শিশু রয়েছে। হামলার শিকার শহর ডোব্রোপিলিয়া, যেখানে আটটি আবাসিক ভবন এবং একটি শপিং সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া, খারকিভ অঞ্চলের বোহোদুখিভ শহরে ড্রোন হামলায় তিনজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। ওডেসা অঞ্চলেও রাশিয়ার হামলায় বেসামরিক অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে, ডিটেক জ্বালানি কোম্পানি জানিয়েছে, এটি ছিল ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর সপ্তম হামলা, যা গত তিন সপ্তাহে চালানো হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক টেলিগ্রাম পোস্টে দাবি করেছেন যে,
রাশিয়া প্রথম হামলার পর উদ্ধারকর্মীদের লক্ষ্য করে দ্বিতীয় হামলা চালিয়েছে। তিনি জানান, “এই ধরনের হামলা প্রমাণ করে যে রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে।”
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার হামলা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ হওয়ার পর। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে রাশিয়া দুই-ফ্রন্টে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, এবং এর ফলে নিহত ও আহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
এদিকে, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এক টুইট পোস্টে বলেছেন, “যখন কেউ বর্বরদের তুষ্ট করে, তখনই এমন ঘটনা ঘটে। আরও বোমা, আরও আগ্রাসন, আরও হতাহত।” এমন পরিস্থিতি নিয়ে তার এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় চেয়ে তিনি আরও বেশি সমস্যায় পড়ছেন। তিনি ইউক্রেনের সামরিক সহায়তা বন্ধ রাখার বিষয়টিও উল্লেখ করেন, তবে রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও ভাবছেন।
রাশিয়ার সর্বশেষ হামলার পর, ইউক্রেনও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেনের ৩১টি ড্রোন প্রতিহত করেছে। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আগামী সপ্তাহে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সৌদি আরবে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এদিকে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের পর, রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০% ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। যুদ্ধের কারণে দেশটির মানুষজন ব্যাপক বিপদের মধ্যে রয়েছেন এবং প্রতিদিন নতুন নতুন ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।
পড়ুন: ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করলেন ট্রাম্প
দেখুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কে জিতবে? |
ইম/