ইউক্রেনের কামানের গোলার আঘাতে আহত রুশ সাংবাদিক নিকিতা গোলদিন অবশেষে মারা গেছেন। মস্কোর একটি সামরিক হাসপাতালে প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর কর্মস্থল। নিকিতা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পরিচালিত জাভেজদা টেলিভিশনের হয়ে কাজ করতেন।
গত ২৪ মার্চ ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন লুহানস্ক এলাকায় হামলার শিকার হয় নিকিতাদের দল। ওই ঘটনায় ছয়জন নিহত হন, যাঁদের মধ্যে দুজন সাংবাদিক ও একজন গাড়িচালক ছিলেন। হামলার সময় নিকিতা গুরুতর আহত হন এবং দ্রুত তাঁকে মস্কোয় সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে রুশ সামরিক বাহিনীর দৈনিক সংবাদপত্র ‘ক্রাসনায়া জাভেজদা’, যেখানে তিনিও লেখালেখি করতেন।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলার জন্য সরাসরি ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। তারা বলছে, সাংবাদিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন।
এদিকে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস’ (সিপিজে) জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় সাংবাদিকদের জীবনের ঝুঁকি ও স্বাধীন সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে, তা গভীর উদ্বেগের কারণ বলে মনে করছে সংগঠনটি।
যুদ্ধের মধ্যে সাংবাদিকদের ঝুঁকি নিয়ে নানা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। যুদ্ধক্ষেত্রে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক হামলার শিকার হচ্ছেন, যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
নিকিতা গোলদিনের মৃত্যু সেই বাস্তবতার একটি করুণ প্রতিচ্ছবি। তাঁর সহকর্মী ও পরিবার এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সত্য তুলে ধরতে গিয়ে প্রাণ হারানো এই সাংবাদিককে রাশিয়ার অনেক সংবাদমাধ্যমে ‘নির্ভীক প্রতিবেদক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি এই সপ্তাহেই, আশা ট্রাম্পের
দেখুন: রাশিয়ার যে কৌশলে হিমশিম খাচ্ছে ইউক্রেন
ইম/