ইসরায়েলের তেলআবিব, জেরুজালেমসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে দুই দফায় মিসাইল হামলা চালিয়েছে দেশটির প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান।
ইরানকে এই হামলার ‘ফল ভোগ করতে হবে’ বলে ইসরায়েল জবাব দেওয়ার যে হুমকি দিয়েছে, তাতে মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধের শঙ্কা আরও গভীর হচ্ছে।
অন্তত ১৮০টি ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চল কেঁপে উঠেছে বলে খবর এলেও হতাহতের কোনো তথ্য দেয়নি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, নেভাতিম ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। যেগুলো একের পর এক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে দেখা গেছে। ইরানের চৌকস ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলে ছোড়া মিসাইলের ৯০ শতাংশ নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া এসব মিসাইল আটকাতে আয়রন ডোমসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। কিন্তু তা সত্ত্বে অনেক মিসাইল সরাসরি আঘাত হেনেছে। আর মিসাইলের আঘাতে বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
আঞ্চলিক অস্থিরতার আরও বৃদ্ধি এড়াতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আপাতত স্থগিত করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি জানিয়েছেন, ‘ইসরায়েল কোনও প্রতিহংসামূলক পদক্ষেপ না নিলে আমাদের আক্রমণের আপাতত এখানেই সমাপ্তি। কিন্তু যদি আবারও উসকানি দেওয়া হয়, আমাদের দিক থেকেও দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরানের রাস্তায় উদযাপন করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে। ইরান এবং হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে বহু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হিজবুল্লাহ নেতার ছবিও ছিল অনেকের হাতে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জ্যাক সুলিভান দাবি করেছেন, দখলদার ইসরায়েলের ওপর ইরানের চালানো মিসাইল হামলা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেছেন, “দেখে মনে হচ্ছে তাদের হামলা ব্যর্থ এবং অকার্যকর” ছিল।”
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পাশাপাশি, ওই অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদেরও সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ইরানের হামলার পর গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননে ইসরায়েল আরও শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।