ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নারকীয় আক্রমণ চালাচ্ছে। গত সপ্তাহ থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার উপর একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে চলেছে, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুদেরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে হামাসও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, এবং তেল আবিবসহ ইসরায়েলি শহরগুলোর উপর রকেট হামলা চালিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যে রকেট হামলা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হলেও, তাদের আক্রমণের গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে গাজার খনি ইউনিসে হামাসের শীর্ষ নেতাদের উপর হামলার পর। অন্যদিকে, লেবানন থেকেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রকেট হামলা চালানো হয়, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও বিপদের মধ্যে ফেলেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে, আমেরিকা ইসরায়েলে অবস্থানরত নাগরিকদের জন্য নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। মার্কিন দূতাবাস দেশটির নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে এবং জানিয়েছে, বৃহৎ বিক্ষোভ ও রকেট হামলা থেকে সরে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া, তাদের নিকটতম আশ্রয়স্থল জানার জন্যও বলা হয়েছে, কারণ পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে।

ইসরায়েলের বিমান হামলা গাজার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ধ্বংস সাধন করেছে, যা স্থানীয় মানুষের জীবনে আরও বিপর্যয় নিয়ে এসেছে।
গাজার হাসপাতালগুলোতে আহতদের সেবা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী নেই, আর এই পরিস্থিতিতে সেখানে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কিছুদিন আগে গাজায় নতুন করে আক্রমণ শুরু করলে হামাসও রকেট হামলা চালিয়ে পাল্টা প্রতিশোধ নিয়েছে। এতে যুদ্ধের আকার আরও বড় হয়েছে এবং অঞ্চলটি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বাণিজ্যিক কেন্দ্র তেল আবিবে হামাসের রকেট হামলা চালানোর পর, পুরো দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রকেট হামলা চালানোর জন্য হামাস অবশ্য রেলপথ এবং বিমানবন্দরগুলোকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপের পরিকল্পনা করছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা এসব হামলা প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া, গত সপ্তাহে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
সংকটজনক পরিস্থিতিতে, মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের জন্য আরও কঠোর নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে, এবং বলেছে যে এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে কোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। সতর্কতাটি ইসরায়েলের বৃহৎ বিক্ষোভ ও রকেট হামলার মধ্যে নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ দেশটির নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা কোনো বিপদে না পড়েন।
এছাড়া, লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকলেও, গত শনিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার ঘটনায় ওই চুক্তির নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে এবং এর ফলে ইসরায়েল লেবানন অঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি এক ভীষণ সংকটময় এবং বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় এবং মানবাধিকার রক্ষা করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে।
পড়ুন: হামাসের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
দেখুন: জোঁকের মুখে লবণ! ই/স/রা/ই/লে/র খেলা শেষ? |
ইম/