গাজায় ১৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ গাজায় ৪০ হাজারের বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী অঞ্চলটিতে ১ লাখ টনেরও বেশি বিস্ফোরক ফেলেছে, যার একটি বড় অংশ এখনো অবিস্ফোরিত রয়ে গেছে। আর এই অবিস্ফোরিত বোমা দিয়েই পুনরায় অস্ত্র তৈরী করছে হামাস।
গত মঙ্গলবার (৬ মে) ইসরায়েলের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক হারেৎজ জানায়, গাজায় ইসরায়েলে ছোড়া অবিস্ফোরিত বোমা থেকেই অস্ত্র তৈরি করছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিক্ষেপ করা প্রায় ৩ হাজার অবিস্ফোরিত বোমা এখন স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের কাছে। এসব বোমার বিস্ফোরক ব্যবহার করেই তারা হাজার হাজার ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরি করছে।
এই বিস্ফোরক দিয়ে ইসরায়েলি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি খান ইউনিসে এমন একটি বিস্ফোরণে ইসরায়েলি ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামাসের দাবি অনুযায়ী, এতে বেশ কয়েকজন সেনা হতাহত হয়।
হারেৎজের অর্থনৈতিক ক্রোড়পত্র দ্য মার্কার জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত বোমাগুলোর মধ্যে কখনো কখনো ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিস্ফোরিত হয়নি। জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস (ইউএনএমএএস) বলছে, গাজায় চালানো ৪০ হাজারেরও বেশি বিমান হামলার মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বোমা অবিস্ফোরিত রয়ে গেছে।
এর আগে ২০২৪ এর শুরুর দিকে ইসরায়েলি সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন যে, ইসরায়েলে হামলা ও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হামাস ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রই ব্যবহার করেছিলো।
সামরিক বিশ্লেষকেরা বহু বছর ধরে বলে আসছেন যে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যেও গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে তৈরি করা পথে চোরাচালানের মাধ্যমে তাদের হাতে ভারী সব অস্ত্র আসে। কিন্ত অস্ত্রবিশেষজ্ঞ এবং ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের ফেলা অবিস্ফোরিত হাজার হাজার গোলাবারুদ দিয়ে নিজেদের জন্য রকেট ও ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা তৈরি হয়েছে হামাসের।
এ থেকে এটা স্পষ্ট যে এতো বছর থেকে গাজায় সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের হামলা করা অবিস্ফেরিত অস্ত্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এনএ/