ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের দুইপক্ষের মধ্যে হওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। একপক্ষ রুমিন ফারহানার উপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে। আরেকপক্ষ এনসিপি নেতা মো. আতাউল্লাহ’র উপর হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ করেছে।
এসব কর্মসূচি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এনসিপির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করা হয়। বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ থেকে হামলাকারিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমান মুন্সি।
এসময় বক্তারা বলেন, রুমিন ফারহানা শুধু আমাদের এলাকার নেত্রী নন। তিনি জাতীয় নেত্রী। তাঁর ওপর ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে আমরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। ইউএনও ও ওসির অনুরোধে আজকে আমরা সরে এসেছি। যারা হামলা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। না হলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন নিয়ে যে মতামত দিয়েছেন, আমরা তাঁর পক্ষে রয়েছি।
অবরোধকারীরা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে মহাসড়কের দুই দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দেখা দেয় ভোগান্তি। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারফ হোসাইন, সরাইল থানার ওসি মোরশেদুল আলম চৌধুরী ও সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম। তাঁদের অনুরোধে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে শুনানিকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ সমাবশে হয়েছে। প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগসহ বিএনপির নেতা রুমিন ফারহানার বিচার দাবি করা হয়। আতাউল্লাহ’র বাড়ি বিজয়নগরে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদর উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়ক সাহিল আহমেদ, সদস্য আসাদুজ্জামান, দ্বীন ইয়ামিন, আরিফ বিল্লাহ হাফেজী, কসবার যুগ্ম সমন্বয়ক মামুন বাতেন, আশুগঞ্জের সমন্বয়ক মো. ডালিম ও যুগ্ম সমন্বয়ক জয়ন্তী বিশ্বাস, নবীনগরের সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সভাপতি গাজী নিয়াজুল করিম। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগসহ বিএনপির নেতা রুমিন ফারহানার বিচারের দাবি করা হয়।
সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, শুনানিতে রুমিন ফারহানা বিজয়নগর উপজেলার তিন ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে রাখার বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। কিন্তু এনসিপির মুখ্য যুগ্ম সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ ওই তিন ইউনিয়নকে আগের মতোই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সঙ্গে রাখার বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে গেলে রুমিন ফারহানা তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে স্টেজ দখলে নেন। পরে রুমিন ফারহানার নেতা-কর্মীরা এনসিপির নেতা আতাউল্লাহ ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের মারধর করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তখন এর কোনো ব্যবস্থা নেননি।
পড়ুন: পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতিসহ নানান দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন
এস/

