আর মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লীতে বেড়েছে ব্যস্ততা। তবে ব্যস্ততা বাড়লেও পুরোদমে এখনো জমে উঠেনি তাঁত শাড়ির বাজার। শ্রমিকরা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন শাড়ি।
সব মিলিয়ে চিরচেনা রুপে ফিরেছে টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লীগুলো। ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবার ঈদেও টাঙ্গাইল শাড়ীতে এসেছে বাহারি ডিজাইন আর নতুনত্ব। তবে মজুরি কম পাওয়ায় হতাশ তাঁতীরা। ঈদের কয়দিন পরেই বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। তাই সব মিলেয়ে দম ফেলার ফুৎরত নেই তাঁত শ্রমিকদের। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মেতেছেন কর্মযজ্ঞে। এবার আসন্ন ঈদে দেড় লাখ পিস শাড়ি বিক্রির আশা করছেন তাঁত মালিক সংশ্লিষ্ট্যরা।

টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লীতে রাত-দিন তাঁতের খটখট শব্দ। প্রতিটি তাঁতপল্লীতে এখন চলছে কর্মযজ্ঞ। এবার ঈদে টাঙ্গাইলের শাড়িতে এসেছে বাহারি ডিজাইন আর নতুনত্ব। পাশাপাশি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষেও তৈরি করা হচ্ছে শাড়ি।
তাঁতের রাজধানী টাঙ্গাইলের পাথরাইল ছাড়াও বাজিতপুর, এলাসিন, করটিয়া, বল্লা, এনায়েতপুর, পোড়াবাড়ি, বাঘিলসহ অন্যন্য তাঁতপল্লীগুলোতে তাঁতের খটখট শব্দে এখন মুখোরিত।সর্বনিম্ন ৫শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
এবার ঈদকে সামনে রেখে নতুন ডিজাইনের শাড়ি ‘ভেজিটেবল ডাই’, এর পাশাপাশি কটকি, হাফ সিল্ক টাঙ্গাইল জামদানি, সফট সিল্কসহ নানা ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। তবে পাওয়ার লুমের কারণে হ্যান্ডলুমের তৈরি শাড়ি কম চলে। সরকার পরিবর্তনের কারণে তাঁত শাড়িতে প্রভাব পড়েছে। ঈদ উপলক্ষে ব্যস্ততা বাড়লেও বেচা-কেনা কম। তবে ঈদ ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এবার ভালো বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ী ও তাঁতীরা।
গত ঈদে দুই থেকে আড়াই লাখ পিস বিক্রি শাড়ি বিক্রি হয়েছিলো। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার সমান। কিন্ত এবার আশা করছি প্রায় দেড় লাখ পিস বিক্রি করার আশা করা হচ্ছে। যা টাকার অংশে ৮০-৯০ কোটি।
তাঁত শ্রমিকরা বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। আগে সপ্তাহে ৩ টি শাড়ির তৈরি করতে পারতাম। কিন্ত এখন সপ্তাহে ৪টি শাড়ি তৈরি করছি। ব্যস্ততা বাড়লেও বর্তমানে আমাদের মজুরি কম। কম মজুরি দিয়ে আমাদের সংসার চলা দূরহ হয়ে উঠেছে। আগের মতো জমজমাট নেই তাঁতপল্লী। তবুও বাব দাদার পেশা ধরে রেখেছি আমরা।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে ক্রেতারা শাড়ি কিনতে ভীড় করছেন টাঙ্গাইলের তাঁতপল্লী ও জেলা শহরের শোরুমগুলোতে। স্বাচ্ছন্দে নিজের জন্য এবং প্রিয়জনকে উপহার দেয়ার জন্য পছন্দের শাড়ি কিনছেন ক্রেতারা।

টাঙ্গাইল জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে এবার নতুন ডিজাইয়ের শাড়ি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আবহাওয়া উপযোগী অনুযায়ী ‘ভেজিটেবল ডাই’ নামের নতুন শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। রোজার ঈদ এবং পহেলা বৈশাখ কাছাকাছি হওয়ায় আশা আশবাদি বিপুল পরিমানের শাড়ি বিক্রি হবে। বিগত সময়ে পাথরাইলে ৫ হাজার তাঁত ছিলো। কিন্ত এখন বর্তমানে ৪শ’ তাঁত রয়েছে। চাহিদা কমাতে আমাদের উৎপাদনও কম হচ্ছে।
এনএ/