উত্তরা বিমানবন্দর থানা পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণের জাল ডলার ও বাংলাদেশী মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে উত্তরা এলাকায় জালটাকার ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে। তাদের দেওয়া অতিঃ লোভে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এই চক্রের সদস্যরা বিশেষ বিশেষ দিনকে টার্গেট করে ছড়িয়ে পড়ে পাইকারি বাজার, মাছ মাংসের বাজার ও সবজির বাজারে।
এছাড়াও তারা বড় বড় শপিং কমপ্লেক্স,পাড়া মহল্লায় হাট বাজার ও মুদি দোকানকে টার্গেট করে জালটাকার ব্যবসা করে যাচ্ছে। মুসুলমানদের ধর্মীও উৎসব দুই ঈদে কোটি কোটি টাকার জালটাকা, জাল ডলারের ব্যবসা করে আসছে তারা।
ঈদুল আযহার সময় গরু ছাগলের হাট বাজারে তারা কয়েক কোটি টাকার জাল টাকা বাজারে ছেড়ে দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে আসল টাকা। রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল ইউএস ডলার ও বাংলাদেশি মুদ্রা উদ্ধার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ।

পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা এই অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তারা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন। তবে একজনের তথ্যের ভিত্তিতেই মূল অভিযান পরিচালিত হয়।
এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর ২৫(ক)(বি) ধারায় দায়ের করা মামলা নং-২২, তারিখ ১৫ মে ২০২৫।
পুলিশ আরো জানান, রিমান্ডে থাকা মূল আসামি আশিক (২০), পিতা-মোঃ আতাউর রহমান, মাতা- জোসনা, স্থায়ী ঠিকানা: দক্ষিণগাঁও, কাপাসিয়া, গাজীপুর—তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম, এসআই রোকন ইসলাম খান এবং সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স দক্ষিণখান থানা এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় শেখ এহিয়া জান্নাত ইমন জনি (৩০), পিতা- ইলিয়াস আলী, মাতা- জুলি পারভীন এবং সাদিকুর রহমান অয়ন (২০), পিতা- মোস্তাফিজুর রহমান, মাতা- খোরশিদা পারভিন সুমি—দুজনই সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার পোতজিয়া (গাতিরপাড়া) এলাকার বাসিন্দা। তারা দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান নাজনিন ভিলার ১৩ নম্বর বাড়ির ৭ (বি) কক্ষে অবস্থানরত ছিলেন।
জানা যায়, অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের শয়নকক্ষের খাটের নিচে রাখা একটি কার্টুন থেকে উদ্ধার করা হয়। ১০০ ডলারের নোটে ৫০ বান্ডেল, প্রতি বান্ডেলে ১০০টি করে মোট ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) ইউএস ডলার, প্রতিটির গায়ে লেখা: HL63614682E। এ ছাড়াও ১০০০ টাকার জাল নোট ১৪৮৪টি, মোট মূল্য: ১৪,৮৪,০০০ টাকা, প্রতিটির গায়ে লেখা: গ চ ০০০০০০২।
৫০০ টাকার জাল নোট ১১০০টি, মোট মূল্য: ৫,৫০,০০০ টাকা, প্রতিটির গায়ে লেখা: গ ফ ১৪৭৯৪৩। ১০০ টাকার জাল নোট ২০০০টি, মোট মূল্য: ২,০০,০০০ টাকা, প্রতিটির গায়ে লেখা: জ ম ১৩৫৯৩৬৪।
এ ঘটনায় জাল নোট তৈরি, বিতরণ ও পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম।
উদ্ধারকৃত সকল জাল নোট সেখানে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জাল নোট চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।