ব্যবসায় নৈতিকতার নজির রেখে গেলেন প্রয়াত শিল্পোদ্যোক্তা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। প্রয়াত এই উদ্যোক্তা দেখিয়ে গেলেন, নীতিনৈতিকতা আর সততা দিয়ে ব্যবসা করলেও সফল হওয়া যায়। মঞ্জুর এলাহী ছিলেন উদ্যোক্তাদের বাতিঘর। আর ব্যবসায় সম্পৃক্ত হন অভিজাত জীবন ছেড়ে। সাইদ আরমানের ডেস্ক রিপোর্ট।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। আর ব্যবসায় নাম লেখান বহুজাতিক কোম্পানীর চাকরি ছেড়ে। কাজ করেছেন পাকিস্তান ট্যোবাকোতে।
অভিজাত নিশ্চিত জীবন ছেড়ে, বেছে নেন দুর্গন্ধময় হাজারীবাগ। ১৯৭২ সালে মঞ্জুর ইন্ডাস্ট্রিজ নামে কোম্পানী করে নাম লেখান চামড়া ব্যবসায়। আর শুরু করেন কমিশনে চামড়ার ব্যবসা। তবে থেমে থাকেননি। যেহেতু চামড়ার চূড়ান্ত গন্তব্য জুতা, গাজীপুরে গড়ে তোলেন জুতার কারখানা।
১৯৯১ সালে কারখানায় দেড়শ শ্রমিক দিয়ে জুতা তৈরি শুরু হয়। উৎপাদন সক্ষমতা ছিলো দৈনিক এক হাজার জোড়া জুতা। আর প্রথম রপ্তানি চালানা পাঠান জার্মানিতে। ব্যবসায় নানা চড়াই, উৎরাত পার করতে হয়েছে তাকে।
তবে বাড়িয়েছেন নতুন নতুন বিনিয়োগ, নিয়েছেন ঝুকি। চামড়া ও জুতার ব্যবসার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায় যুক্ত হন মঞ্জুর এলাহী। তিনি ছিলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এছাড়া অ্যাপেক্স ফার্মা, অ্যাপেক্স এন্টারপ্রাইজসহ যুক্ত হয়েছিলেন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়।
ব্যবসার বাইরে, স্ত্রীর আগ্রহে প্রতিষ্টান করেন ইংরেজি মাধ্যমের সানবিমস স্কুল। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট এর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ছিলেন। ব্যবসা, ব্যবসার বাইরের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন এই শিল্পোদ্যোক্তা। জীবন নিয়ে তার ছিলো না কোন আফসোস।
জীবন চলার এই দৌড়ে মনে রেখেছেন, সবার আগে দেশ, আর এমন উপদেশ সন্তানদের দিয়ে গেছেন জীবনের শেষ মুহুর্তে। আর নীতিনৈতিকতা দিয়ে ব্যবসা করলেও যে সফল হওয়া যায়, তার নজির ব্যবসায়ীদের এই বাতিঘর। আর তার জীবন অবসান মুহুর্তে তারই কথায় বলতে হয়, কোথাও না কোথাও টানতে হয় দাড়ি।
এনএ/