প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজকে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য তিনি বিশ্বের বন্ধুরাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন।
১৭ জানুয়ারি ২০১৮ বুধবার সকালে দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা একথা বলেন। বিডিএফের এবারের প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব’ বা ‘পার্টনারশিপ ফর ডেভেপলমেন্ট’।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিবেশের পরিবর্তন ও জলবায়ু সংক্রান্ত হুমকির মোকাবেলা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন বাংলাদেশের। এজন্য উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এসডিজি অর্জনের বড় চ্যালেঞ্জ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এজন্য উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোকে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আন্তর্জাতিক সহযোগী দেশ ও সংস্থাসমূহসহ ব্যক্তিখাতের অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ইউএনসিডিপি’র(ইউনাইটেড নেশনস কমিটি ফর ডেভলেপমেন্ট পলিসি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের (গ্রাজুয়েশন) যোগ্যতা লাভ করবে। এলডিসি’র থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নশীল দেশসমূহের পাশে দাঁড়াতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ বর্তমানে বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করে, যা গ্রাজুয়েশনের পর বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং কার্যক্ষেত্রে প্রস্তুতির মাধ্যমে তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ তার প্রভাব মোকাবেলায় কৌশলগত প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাংলাদেশকে অমিত সম্ভাবনার দেশ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের বুকে একটি গতিশীল অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার প্রত্যয় ও উপকরণ রয়েছে আমাদের। বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের এই বৈঠক দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যৌথ কর্মপন্থা নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
সরকারের বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বিগত এক দশকে আমাদের গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.২৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে এই হার ৭.২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। একইসময়ে আমাদের রফতানি আয় ও বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ তিন গুণ বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় নয় গুণ বেড়ে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে।
Leave a Reply