দেশের ব্যাংক খাতে ঋণমান কমালো আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিস। সংস্থাটি বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যত অনিশ্চিত বলেও, পূর্ভাবাস দিয়েছ।
মুডিস বলেছে, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সম্পদের মানের অবনতি ও দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের ঋণমান ‘বি-ওয়ান’ থেকে কমিয়ে ‘বি-টু’তে নামিয়েছে। অর্থাৎ এই পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ অবস্থায় চলে গেছে।

বিশ্বখ্যাত ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস এসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সম্পদের ঝুঁকি বাড়ছে ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই অবনতি ব্যাংকগুলোর মুনাফা ও স্থিতিশীলতার ওপর চাপ তৈরি করবে।
সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে, যা আগের বছরের ৫ দশমিক ৮ শতাংশের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ কম।
মুডিস বলছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর হয়ে যাওয়ায় এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তারা বলছে, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত তৈরি হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা হ্রাস অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দ হওয়ার অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ মাসের ব্যবধানে নীতি সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করেছে। কয়েক দফা বাড়ানো হয় এই নীতি সুদ। তারপরও এখনো মূল্যস্ফীতি উচ্চমাত্রায় রয়েছে। এটি প্রায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশে থাকার আশঙ্কা করছে মুডিস।

মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের সম্পদের ঝুঁকি বাড়ছে। কারণ, খেলাপি ঋণের হার বেড়ে চলেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ১৭ শতাংশে পৌঁছায়, যা কি না তার ৯ মাস আগে ছিল ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, দেশে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে এই পাহাড় সমান খেলাপির চিত্র পাওয়া গেছে। মন্দ ঋণে নাজুক অবস্থায় সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এটি আরও বাড়বে।
এনএ/