১৮/০৬/২০২৫, ২৩:০৭ অপরাহ্ণ
26.1 C
Dhaka
১৮/০৬/২০২৫, ২৩:০৭ অপরাহ্ণ

মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপ: এনসিপি নেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। 

১৪ মে রাতের এই ঘটনাটি রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনে ঘটে, যখন মাহফুজ আলম, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সেখানে উপস্থিত হন। সেখানে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে একটি প্লাস্টিকের পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়। এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এনসিপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন নেতৃবৃন্দ এর তীব্র নিন্দা জানান।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন তার ফেসবুক পোস্টে ঘটনার নিন্দা জানান এবং হামলার উদ্দেশ্য অনুসন্ধান করার জন্য সরকারকে তাগিদ দেন। তিনি বলেন, “এই হামলাকে ন্যায্যতা দেওয়ার সুযোগ নেই এবং দোষীকে আইনের আওতায় আনা উচিত।” তিনি আরও বলেন, যেসব ন্যায্য দাবি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন, সেগুলি দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মাহফুজ আলম কোনো শিক্ষা উপদেষ্টা নন, তবে তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বেরিয়েছিলেন। তার সঙ্গে যে আচরণ হয়েছে, সেটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।” তিনি আরও বলেন, “এটি একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত হতে পারে।”

এদিকে, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহও ফেসবুক পোস্টে এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মাহফুজ আলম একজন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে সমস্যা সমাধানে গিয়েছিলেন। তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। এ ধরনের উগ্র আচরণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করবে।” তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে সমালোচনা হতে পারে, কিন্তু শারীরিক লাঞ্ছনা বর্বরতা এবং এর কোনো যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা নেই।”

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদও তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, “মাহফুজ আলম আমাদের ভাই, এবং ভাইয়ের সম্মানে আঘাত করা উচিত নয়।” তিনি আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন ভবিষ্যতে এমন আচরণের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এ ঘটনায় এনসিপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি জবাবদিহি দাবি করা হয়েছে। তারা প্রশ্ন করেছেন, কেন শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার ততটা তৎপর হয়নি, যার কারণে এই ধরনের সংঘর্ষ এবং অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এটি প্রথমবার নয়, যখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে আন্দোলন করছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবির মধ্যে রয়েছে শিক্ষার মান উন্নয়ন, ক্যাম্পাসের উন্নয়ন এবং অন্যান্য শিক্ষাগত সুবিধা। কিন্তু সরকার পক্ষ থেকে এখনও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যার কারণে আন্দোলনকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

এছাড়া, মাহফুজ আলমের সাথে হামলাকারীর রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং এই ঘটনার পেছনে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা তদন্তের জন্য এনসিপির নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এটি শুধু ব্যক্তিগত হামলা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা হতে পারে।

এছাড়া, এনসিপির নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে এবং তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য এবং সেই দাবির সমাধান দ্রুত হওয়া উচিত।”

পড়ুন: আপত্তিকর স্লোগানের দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষের: এনসিপি

দেখুন: বনিবনা হচ্ছে না রাজনিতির মাঠে, তবুও আলোচনায় বিএনপি-এনসিপি

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন