কলকাতা পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে আনোয়ারুল আজিমকে। এরপর মরদেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিক ব্যাগে করে ফ্রিজে রাখা হয়েছিল। লাশের সেই টুকরোগুলো পরবর্তীতে ট্রলি ব্যাগে বাইরে সরানো হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন ধারণাই করছে কলকাতা পুলিশ। তবে মৃত্যুজট খুলছে না, কারণ এখনও সন্ধান মেলেনি মরদেহের।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীনের পরিকল্পনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্যও। কলকাতা পুলিশের ধারণা, আনারকে সঞ্জীভা গার্ডেনে হত্যা করার পর মরদেহ অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঘটনার অধিকতর তদন্তে আজ দুপুরেই বাংলাদেশে আসছে ভারতীয় পুলিশের একটি স্পেশাল টিম।
এদিকে, যে ফ্লাটে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, গত ১৩ মে এই সেখানে উঠেন আনোয়ারুল আজিম। তার সাথে ছিলেন আরো তিন ব্যক্তি, যার মধ্যে একজন নারী। এরপর ওই দিন আনোয়ার আবাসনের বাইরে না বেরোলেও বাকিরা বেশ কয়েকবার ওই আবাসনে আসা-যাওয়া করেন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার দিন ওই ফ্লাটের একটি ঘরে পানাহারের আয়োজন করা হয়। আনোয়ারুল এক পর্যায়ে বেহুঁশ হয়ে গেলে তাকে খুন করা হয়। প্রথমে তাকে পোশাক দিয়ে শ্বাস রোধ করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। আর তারপরেই লাশকে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে বাইরে সরিয়ে দেয়া হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ারুলকে হত্যার ছক তৈরি করা হয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রে। ওই এমপি কবে কলকাতা ঢুকছেন, কোথায় থাকবেন, তার সব তথ্যই জেনে নেন হত্যাকারীরা। একাজে তাদের সহায়তা করতে ওই ফ্ল্যাটটি তাদের দেন ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া আখতারুজ্জামান শাহিন। ফ্ল্যাটে যে নারী ছিলেন তিনিই এমপি আনোয়ারুল আজিমকে ভারতে ডেকে এনেছিলেন। খুনের প্রধান সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামান শাহিন। ঝিনাইদহের কোটচাদপুর পৌর মেয়র শহিদুজ্জামান সেলিমের ছোট ভাই এই শাহিন। গোয়েন্দা পুলিশেরই একটি সূত্র জানায়, এমপি হত্যার পর কলকাতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন শাহিন।
বুধবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা সাংবাদিকদের জানান, আনোয়ারুল আজিম শেষ যে ভাড়া গাড়িটি কলকাতায় ব্যবহার করেছিলেন, সেই ক্যাবটির চালক জেরার মুখে স্বীকার করেছে ওই যাত্রীকে খুন করে তার দেহ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো।
এই হত্যাকান্ডের ঘটনা তদন্তে গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছে দুদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।