প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলকর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ছাত্র রাজনীতি অঙ্গন। এ ঘটনায় ছাত্রদল অভিযোগ করেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সদস্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তবে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং নিন্দা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রোববার (২০ এপ্রিল) ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভেরিফায়েড পোস্টে সংগঠনটি জানায়, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ কয়েকজন পারভেজ হত্যায় তাদের বনানী শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার এবং যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীর নাম উল্লেখ করেছেন। অথচ তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না এবং ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন, সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে তুষার ও হৃদয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া PUSAB-এর (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) ফেসবুক পেইজে তিনজন সন্দেহভাজনের নাম থাকলেও তাতে এই দুইজন অন্তর্ভুক্ত নন।
তাদের দাবি, ছাত্রদল এক ধরনের ‘দায় দিয়ে দাও’ সংস্কৃতি চর্চা করছে, যা অতীতেও দেখা গেছে। এভাবে প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মব ট্রায়াল চালানো হচ্ছে, যা দুটি তরুণ নেতার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এতে প্রকৃত হত্যাকারীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
অন্যদিকে, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির গত শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী শাখার সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি মন্তব্য ও অবস্থান।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। জানা গেছে, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির জেরে প্রাইম এশিয়ার কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে পারভেজের বাকবিতণ্ডা হয়। যদিও পরে বিষয়টি মীমাংসা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়। কিন্তু সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত তাকে ঘিরে ধরে আক্রমণ চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ছাত্র রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তদন্তের দাবি জানিয়ে দুই পক্ষই তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করছে। এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন পক্ষ।
পড়ুন: বরিশালে পলিটেকনিক ছাত্রদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
দেখুন: ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ও বিচারের সর্বশেষ খবর
ইম/