27 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

৭ মাস পর কবর থেকে তোলা হয়েছে অভিনেত্রী তানজিন তিশার সহকারী আল-আমিনের মরদেহ

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ৭ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনে নিহত আল-আমিনের মরদেহ। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে, উত্তরা পশ্চিম থানা ও শ্রীনগর থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে বালাসুর কাশেমনগর কবরস্থান থেকে এই মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

এ ঘটনার পর অভিনেত্রী তানজিন তিশা ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি লিখেছেন, আল-আমিন তার শুধুমাত্র সহকারী নয়, তার ভাই ছিলেন। পাঁচ বছর একসাথে থাকার পর, যিনি নিষ্পাপ ছিলেন এবং ঐ আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। ৭ মাস পর মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি তিনি সমর্থন করছেন না এবং এ কারণে আল-আমিনের আত্মার কষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তিশা আরও বলেন, ‘এই কর্মের মাধ্যমে কী লাভ হবে? শুধুমাত্র তার আত্মাকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে।’

তানজিন তিশার এসব বক্তব্য নিয়ে বেশ আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেছেন, ‘এই পদক্ষেপের পেছনে কোন উদ্দেশ্য রয়েছে?’ আল-আমিনের মৃত্যু ঘটেছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাসে, যখন ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছিল। ১৯ জুলাই, রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত আল-আমিন পরে উত্তরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। পরে, ২০ জুলাই শ্রীনগরের কাশেমনগর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ঘটনার চার মাস পর, আল-আমিনের বড় ভাই বাদল খলিফা উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের ফলস্বরূপ, আল-আমিনের বাবা আইয়ুব খলিফার সম্মতিতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তা শাহীন মাহমুদ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে সাত মাস পর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বর্তমানে, পুলিশ বিভাগের নির্দেশনায় মরদেহের ময়নাতদন্তের কাজ চলছে। যদিও তানজিন তিশার বক্তব্য, নিহতের পরিবারের আরেকটি বড় প্রশ্ন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন করাটা আদৌ প্রয়োজন ছিল কি না।

আল-আমিনের মৃত্যু দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল। বিশেষত তার মৃত্যুতে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদী আন্দোলন চালানো হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা গুলির প্রতিবাদে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলে, যা তাদের অধিকারের জন্য ছিল।

এদিকে, ময়নাতদন্তের জন্য আল-আমিনের মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এতে মরদেহের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে এবং প্রশ্ন উঠেছে, ময়নাতদন্তের জন্য এতদিন পর মরদেহ উত্তোলন করা কতটা সঠিক পদক্ষেপ।

অন্যদিকে, আল-আমিনের পরিবার এবং তার সহকর্মীরা এই বিষয়টি নিয়ে নানা মতামত প্রকাশ করেছেন। তার সহকর্মীরা এবং বন্ধু মহল জানাচ্ছেন, সাত মাস পর মরদেহ উত্তোলন করাটা একেবারেই অযৌক্তিক এবং এর ফলে কেবল মৃতের আত্মাকে কষ্ট দেওয়া হবে।

এই বিষয়টি এখনো দেশের জনগণের মধ্যে তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, সত্যিই কি ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উত্তোলন একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ছিল, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে?

পড়ুন : “ছোট ভাই কবর জিয়ারত করতে গিয়ে দেখে বাবার লাশ নেই, আরেক‌টি কবর খোঁড়া”

দেখুন : ঘোড়ায় চড়ে প্রায় তিন হাজার কবর খুঁড়েছেন মনু মিয়া 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন