
এক পলকের একটু দেখা, একজন প্রেমিকের মনে কীভাবে দোলা দেয় সেটা পরিমাপ করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। স্বল্প সময়ের একটু দেখা অসামান্য হয়ে ওঠে প্রেমিকের মনে। ওই মনে তখন ফুটে ওঠে হাজারও গোলাপ। স্বপ্নের উঠোনে তখন জন্ম নেয় খণ্ড খণ্ড অজস্র কবিতা। কোনো এক গানের কলি তখন উচাটন মনকে প্রচণ্ডভাবে আলোড়িত করে। “এক পলকের একটু দেখা/ আরও একটু বেশি হলে/ ক্ষতি কী……..। “
তাহলে এই ‘পলক’ কতো সময় জুড়ে হয় – সেটা প্রশ্ন হতে পারে। স্বল্প সময় বোঝাতে পলক, নিমেষ, মুহূর্ত বা দণ্ডের দৈর্ঘ্যই-বা কতোখানি। পলক, নিমেষ, মুহূর্ত, দণ্ড শব্দ চারটি খুব কাছাকাছি অর্থ বহন করে। তবুও আভিধানিকভাবে শব্দ চারটির অর্থসহ কালের নামাবলিতে এর দৈর্ঘ্য সম্পর্কে কী বলা হয়েছে – সেটা দেখে নেওয়া যায়।
পলক অর্থ চোখের পাতা ফেলতে যতোটুকু সময় লাগে, নিমেষ ইত্যাদি। অর্থাৎ পলক ও নিমেষ একই অর্থ বহন করে।
কালের নামাবলিতে দেখা গেল, এক পলক বা এক নিমেষ হচ্ছে এক সেকেণ্ডের ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ৬ হাজার ৬শ’ ৬৬ ভাগের এক ভাগ। তাহলে এক পলক বা এক নিমেষের দেখায় কী এমন রসায়ন রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে একজন প্রেমিক বা একজন প্রেমিকা জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিতে চায়! সে এক জটিল রহস্য!

মুহূর্ত অর্থ অতি অল্প সময়। মুহূর্ত হলো দিবানিশির ৩০ ভাগের এক ভাগ যার দৈর্ঘ্য ৪৮ মিনিট। আর দণ্ড বলতে বোঝায়, সময়ের বিভাগবিশেষ যার দৈর্ঘ্য ২৪ মিনিট। অর্থাৎ ২ দণ্ডে ১ মুহূর্ত। তাহলে এক দণ্ড বা এক মুহূর্ত বলতে যে সংক্ষিপ্ত সময় বোঝানো হয় তা যথার্থ নয়। দণ্ড বা মুহূর্ত বেশ লম্বা সময়। দণ্ড হয় ২৪ মিনিটে, মুহূর্ত হয় ৪৮ মিনিটে। কী এক এলোমেলো ব্যাপার!
১ নিমেষ = (.১০৬৬৬৬৬৬ সেকেণ্ড প্রায়)
১৫ নিমেষ = এ কাষ্ঠা
৩০ কাষ্ঠা = ১ কলা
৩০ কলা = ১ ঘটিকা (২৪ মিনিট/ দণ্ড)
২ দণ্ড = ১ মুহূর্ত (৪৮ মিনিট)
৩০ মুহূর্ত = ২৪ ঘণ্টা।
সময়ের দৈর্ঘ্য আর মনের আকুলতার মিল আমি মেলাতে পারছি না। ভাবছি, সময়ের আগে মন, নাকি মনের আগে সময়?
লেখক: সাখাওয়াত হোসেন, বার্তা সম্পাদক, নাগরিক টেলিভিশন
