
##রকিবুল হক তুহিন##
পর্যটক নগরী কক্সবাজার, কুয়াকাটা দেশের ভ্রমণ পিপাসুদের সবসময় আকৃষ্ট করে। রাজশাহীতে সমুদ্র নাই তবে রয়েছে সুবিশাল বিস্তৃত আয়তনের পদ্মাপাড়। ভ্রমণ পিপাসুরা পদ্মাপাড় ও রাজশাহীর মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখতে আসেন। যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেকদুর এগিয়েছে রাজশাহী।
সারা দেশের সাথে যোগাযোগ আরও সহজ হয়েছে। রাজশাহী-ঢাকা ট্রেন, বিমান, বাস যোগযোগ এখন অনেকটাই চমৎকার। রাজশাহীকে পর্যটন নগরী রূপে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। নগরীর দক্ষিণে পদ্মা নদীকে ঘিরে বিনোদন প্রিয়দের আকৃষ্ট করতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ণিল সাজে। ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশী নাগরিকসহ সুধীজনদের কাছে নগরীর নান্দনিক সৌন্দর্য্যর বিষয়টি এখন সর্বমহলে আলোচনায়।

দেশি-বিদেশী পর্যটকদের ঘুরতে আসার নগরী এখন রাজশাহী। চমৎকার সুন্দর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রাজশাহীর। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ফুলের সৌন্দর্য্যে সুদৃশ্য আইল্যান্ড, বৃক্ষরোপণ, সবুজায়ন, সড়ক প্রশস্তকরণ, নতুন রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ এ নগরীকে আরও আকর্ষণীয় নগরীতে পরিণত করেছে। রাজশাহীর এমন দৃশ্য দেখতে সাজিয়ে তুলতে সারা বছর কর্মযজ্ঞ অব্যাহত রাখা হয়েছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীর সকল চিত্র পাল্টে দিয়েছেন রাজশাহীর উন্নয়নের রূপকার নগরপিতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

গ্রিন, ক্লিন, হেলদি সিটি রাজশাহী নগরী বাংলাদেশের জন্য মডেল ও বিশ্বের বুকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজশাহী নগরীতেও বহুমাত্রিক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। যার সুফল পাচ্ছে নগরবাসী। কর্মসংস্থানে পিছিয়ে থাকা রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে হাইটেক পার্ক, বিসিক শিল্প এলাকা তৈরিসহ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে।

রাজশাহী মহানগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান, জিয়া শিশু পার্ক, বরেন্দ্র জাদুঘর, ছোটবনগ্রাম এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে শেখ রাসেল শিশু পার্ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, পদ্মা নদীর পাড় টি-বাঁধ, বধ্যভূমি, বড়কুঠি, পাঠানপাড়া লালন শাহ পার্ক, নোঙর রেস্তোরা। বিমান চত্বর থেকে বুধপাড়া বিহাস। মিনি ফ্লাইওভার। হযরত শাহ মখদুম মাজার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী যাদুঘর, রাতের রাজশাহীকে উপভোগ করতে কল্পনা-তালাইমারী কিংবা বন্ধগেট ঐতিহ্য চত্বর হতে কাশিয়াডাঙ্গা রোড রাস্তায় সুদৃশ্য আলোকায়ণ, সাহেববাজার, নিউমার্কেট, থিম ওমর প্লাজা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রুয়েট, শাহ মখদুম বিমানবন্দর, বধ্যভূমি, বড়কুঠি, পাঠানপাড়া লালন শাহ পার্ক, নোঙর রেস্তোরা, বিমান চত্বর থেকে বুধপাড়া বিহাস মিনি ফ্লাইওভার, হযরত শাহ মখদুম মাজার, বরেন্দ্র যাদুঘর। কল্পনা-তালাইমারী রাস্তা, ঐতিহ্য চত্বর হতে কাশিয়াডাঙ্গা রোড। সিএন্ডবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যূরাল। শহীদ কামারুজ্জামান স্মৃতি সৌধ, শিলিন্দায় চৈতির বাগান। জিএম গার্ডেন নওদাপাড়া বাইপাস রোড, পর্যটন মোটেল, পুঠিয়া রাজবাড়ী, নাটোর রাজবাড়ী, পোস্টাল একাডেমী, সাবাশ বাংলাদেশ, ভুবন মোহন পার্ক, রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয় বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ।
রাজশাহী মহানগরীর বাইরে বিনোদনের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে রাজশাহীর অদুরে পুঠিয়া রাজবাড়ী, গোদাগাড়ীতে সাফিনা পার্ক, তানোরে নাইস গার্ডেন পার্ক, লালপুরে গ্রীণভ্যালী, নওগাঁর কুসুম্বা মসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিনোদনপ্রেমি কয়েকদিনের যে কোন ভ্রমণসূচি নিতে পারেন।

রাজশাহীতে কোন এক সময় চাকুরী কিংবা ছাত্র জীবনে সময় কাটানো তাদের কাছ থেকে শোনা যায়। সত্যিই রাজশাহী বদলে গেছে। মনেই হয়না এটা সেই পুরাণ রাজশাহী। পুরাতন দালানকোঠায় নির্মিত লাল লাল দালানের চিহ্ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। নতুন এটি একটি নতুন নগরী।
বহুতল ভবনের সংখ্যা এখন কম নয়। নাগরিক সকল সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এ নগরীকে আরও নতুন সাজে সজ্জিত করা হচ্ছে। রাজশাহী মহানগরীকে নান্দনিক সাজে সজ্জিত করতে রাস্তা প্রশস্তকরণ, নগরজুড়ে দৃস্টিনন্দন সড়কবাতি সংযোজন করা হয়েছে। আর স্বাস্থ্যকর ও সবুজ নগরী রূপে গড়ে তুলতে রাস্তা, ফুটপাত আইল্যান্ডকে শোভাবর্ধক ফুলে সজ্জিত করা হয়েছে। রাজশাহীর মেয়র লিটনের অনন্য প্রচেষ্টায় রাজশাহী পর্যটন নগরীতে পরিণত হয়েছে।
লেখক: গণমাধ্যম কর্মী ও রেফারি, বাংলাদেশ এ্যামেচার বক্সিং ফেডারেশন
