২১/০৫/২০২৫, ১৮:০৬ অপরাহ্ণ
25 C
Dhaka
২১/০৫/২০২৫, ১৮:০৬ অপরাহ্ণ

কানাডায় লিবারেলের জয়, প্রধানমন্ত্রী হয়েই ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি কার্নির

কানাডায় ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পেয়েছে লিবারেল পার্টি। এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভোট প্রদানের পর ভোট গণনা শেষে এ ফলাফল জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি এবং বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ভাগ্যের একটি অত্যাশ্চর্য পরিবর্তনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় কানাডার এই নির্বাচন। তাই দেশটির শীর্ষ নেতাকে অবশ্যই মার্কিন শুল্ক এবং জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় মোকাবেলা করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন কার্নি।

মার্ক কার্নি একজন অর্থনীতিবিদ এবং ব্যাংকার, যিনি ট্রাম্পের হুমকির মুখে কানাডার জন্য চ্যাম্পিয়ন হিসাবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। নির্বাচনের ফলাফলকে তিনি ‘কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার’ সুযোগ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী কার্নি তার বিজয়ী ভাষণে বলেছেন, ‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্ব অর্থনীতির অগ্রভাগে থাকতে না চায়, তবে কানাডা থাকবে। আমরা আমাদের নিজের বাড়িতে মাস্টার। আমরা লক্ষ লক্ষ আবাসন ইউনিট তৈরি করব। আমরা একটি শক্তির সুপারপাওয়ার হয়ে উঠব। আমরা ব্যবসায় এবং একটি অর্থনীতিতে ভাল ও দক্ষ ক্যারিয়ার সরবরাহ করব।’

কার্নি ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘কানাডিয়ানদের অবশ্যই ট্রাম্পের সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জমি, আমাদের সম্পদ, আমাদের জল, আমাদের দেশ চায়। এগুলো নিষ্ক্রিয় হুমকি নয়। ট্রাম্প আমাদের ভাঙার চেষ্টা করছেন যাতে আমেরিকা আমাদের মালিক হতে পারে; এটি কখনই হবে না, এটি কখনই হবে না।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে আমাদের পুরোনো সম্পর্ক, কিন্তু এখন সেই সম্পর্ক শেষ হয়েছে। আমরা শেষ হয়ে গেছি। আমরা আমেরিকান বিশ্বাসঘাতকতার ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছি, কিন্তু আমাদের কখনই শিক্ষা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’

জয়ের দিনে লিবারেল পার্টি সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তাদের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। একইসঙ্গে কানাডাকে শক্তিশালী করে গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। পোস্টে একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে মার্ক কার্নির ছবি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, মার্ক কার্নি।’

লিবারেলরা কনজারভেটিভদের তুলনায় সংসদের ৩৪৩ আসনের মধ্যে অধিকাংশতেই জয় পেয়েছে। যদিও তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিততে পরেনি। ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, ৩৪৩ আসনের মধ্যে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭ আসন। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫ আসন। কিন্তু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে প্রয়োজন ১৭২টি আসন। তাই এখন ছোটো দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে লিবারেল পার্টিকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট কানাডার অর্থনীতিতে আক্রমণ করা এবং এর সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলার আগে উদারপন্থিরা একটি বিপর্যয়কর পরাজয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল। তবে দাবার গুটি পাল্টে দিয়েছেন ট্রাম্প নিজেই।

তিনি কানাডার তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য করার কথা বলেছেন, যা দেশটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড ক্ষুব্ধ করেছে কানাডিয়ানদের। একই সঙ্গে লিবারেলদের চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় জেতার পথ সহজ করেছেন।

এদিকে সাবেক মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক্সে দেয়া একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘কার্নি আস্থাশীল। তিনি কানাডিয়ান এবং আমেরিকানদের ভাগ করে নেওয়া মৌলিক মূল্যবোধ এবং স্বার্থের জন্য একজন শক্তিশালী নেতা হবেন।’

এর আগে টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর চলতি বছরের শুরুতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন জাস্টিন ট্রুডো। পরে  ৯ মার্চ তার স্থলাভিষিক্ত হন মার্ক কার্নি। সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

কানাডার এই ফেডারেল নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ কানাডিয়ান ভোট দেওয়ার যোগ্য ছিল। এরমধ্যে রেকর্ড ৭৩ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছিলেন।

দেখুন: কেন ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন ট্রুডো? |

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন