কুড়িগ্রামে প্রায় ১৫-২০ শতাংশ মানুষ স্ক্যাবিস রোগে আক্রান্ত।আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, জলবায়ুর প্রভাবে বিশেষ করে বায়ু দূষন ও বাতাসে আদ্রতার পরিমান ৯%কম থাকায় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি। শীতকালে এ রোগের প্রভাব বেশি থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে শীতের আগে অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ।পরিবারে একজনের হলে পরিবারের প্রত্যেকের হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তথ্য মতে, বর্তমানে সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিনই ৫০-৬০ জন রোগী চর্ম রোগের চিকিৎসা নিচ্ছে।এদের মধ্য অধিকাংশ রোগী স্ক্যাবিস রোগে ভুগছেন।স্ক্যাবিস রোগে দ্রূত চিকিৎসা করা না হলে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
চর্ম যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাকিবুল ইসলাম বাঁধন বলেন,স্ক্যাবিস রোগের প্রাদূর্ভাব আগের তুলনায় অনেক বেশি।এটি মানব শরীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিতে পারে। মাথা, হাত পা, পিঠ ঘাড়ে, হাতের কনুই, কব্জিতে স্ক্যাবিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় বাতাসে এ রোগ ছড়ায়।গ্রাম অঞ্চলে স্বাস্থ্য সচেতনার অভাবে এ রোগীর সংখ্যা বেশি বলে জানান ওই চিকিৎসক।
স্ক্যাবিস রোগ থেকে মুক্তি পেতে লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।বাইরের ধূলিকনা, ধোঁয়া থেকে দুরে থাকতে হবে।সাথে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে।এছাড়া এটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় আক্রান্ত রোগী হতে দুরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।
আরেক স্ক্যাবিস আক্রান্ত লক্ষী রানী বলেন,দুমাস আগে হাতে ও পিঠে হঠাৎ ছোট ছোট ফোঁসকা আর চুলকানি শুরু হয়।ত্বক খসখসে হয়ে চামড়া মরে যাচ্ছে।খু্ব খারাপ দেখা যায়।লজ্জায় কাউকে দেখাতে পারি না।বেশি চুলকালে ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে।ওষুধ খেলে কিছুটা কমে তবে পুরোপুরি সারছে না।বড় দুঃশ্চিন্তায় আছি।
আরেক রোগী বিপ্লব মিয়া জানান,স্ক্যাবিস রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছি।চিকিৎসা নিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না।শীত কাল এলে এ রোগের যন্ত্রণা বাড়ে।পরিচিতদের দেখছি শীতকালের আগেও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আরেক রোগী জিন্নাত আরা বলেন,আমিও স্ক্যবিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিলাম।নিয়মিত মাস্ক পরিধান,ধুলাবালি থেকে সুরক্ষা,পরিষ্কার পরিছন্নতা ও চিকিৎসকের পরামর্শ মতে চললে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায়।
চর্ম যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাকিবুল ইসলাম বাঁধন বলেন,এ রোগ হতে সুরক্ষা পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলতে হবে।গোসলের পর পরিষ্কার কাপড় পরিধান করতে হবে।পারম্যাথারিন (Permethrin+cotamiton lotion) লোশন ব্যবহার করলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাঃ স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন,এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ।আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।সারা দেশে এ রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।তবে জেলায় স্পেসিফিকভাবে এ রোগীর সংখ্যার কোন তথ্য নেই।কেননা অনেক রোগী প্রাইভেট প্রাক্টিসে চিকিৎসা নিচ্ছে।তবে অনুমেয় হয় শতকরা ১৫-২০% মানুষ শরীরে এ রোগ বহন করছে।বাতাসে আদ্রতার পরিমান ৯% এর নিচে বিশেষ করে শীতকাল এলে এ রোগের প্রাদূর্ভাব আরো বাড়তে থাকে বলে জানান তিনি।
পড়ুন: ইন্দুরকানীতে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ উদ্বোধন
দেখুন: লাগামছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয়, ঢাকা ছাড়তে চায় মানুষ
ইম/


