কৃষকের কাছ থেকে প্রতি বস্তায় ১০ কেজি আলু বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএডিসি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও জেনারেটর মেশিনের তেল ও কৃষকের কীটনাশক না দিয়ে অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এমন অভিযোগ করেছেন পাকুন্দিয়া বিএডিসি হিমাগারের সহকারী মেকানিক কাম অপারেটর মো. দিদারুল আলম সজল।
অভিযুক্ত এই কর্মকর্তার নাম হারুন-অর-রশিদ। তিনি জেলার পাকুন্দিয়ার বিএডিসির (আলু বীজ) উপ-পরিচালক। ২০১৯ সাল থেকে এই কার্যালয়ে কর্মরত আছেন তিনি। একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি সময় থাকার বিধান না থাকলেও তিনি রয়েছেন ছয় বছর ধরে।
এর আগেও ২০২০সালে কৃষকদের মাঝে ভেজাল বীজ বিতরণসহ প্রতারণার অভিযোগ উঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তখন তার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় কৃষকেরা।
দিদারুল আলম সজল অভিযোগ করে বলেন, বিএডিসির (আলু বীজ) উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ কৃষকের কাছ থেকে প্রতি বস্তায় ১০ কেজি করে আলু বেশি নিতেন। কৃষকের জন্য বরাদ্দের কীটনাশক তাদের মধ্যে বিতরণ না করে আত্মসাৎ করতেন। এছাড়াও জেনারেটর মেশিন অল্প চালানো হলেও বেশি সময় দেখিয়ে ভূয়া বিল-ভাউচার তৈরি করতেন। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করায় তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দিদারুল বলেন, ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এখানে চাকুরি করে আসছি, কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তুু যেদিন উপ-পরিচালক স্যারের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করলাম সেদিনই আমাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চাকুরি ফিরে পেতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পাকুন্দিয়া বিএডিসি (আলু বীজ) উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ, সহকারী পরিচালক ওয়াহেদুর জামান নুর, উপ-সহকারী কর্মকর্তা নায়েব আলী, সহকারী মেকানিক কাম-অপারেটর আনোয়ারুল ইসলামকে বিবাদী করে পাকুন্দিয়া সহকারী জজ আদালতে একটি মোকদ্দমা দায়ের করেন দিদারুল আলম সজল।

মামলার বিবরণে, উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের প্রতিবাদ করায় দিদারুল আলম সজলকে মৌখিকভাবে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে এবং অব্যাহতি দেওয়ার সময় বিবাদীরা কোনোরকম অফিসিয়াল নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হয়নি দাবি করে অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী দিদারুল আলম সজল বলেন, আমার সাথে বৈষম্যমুলক আচরণ করা হয়েছে। নিয়োগ পেয়ে আমি বিগত ১২ বছর যাবৎ সুনামের সহিত চাকরি করে আসছি। ৫ আগস্টের পর আমি বলেছিলাম অনিয়ম-দুর্নীতি করা যাবেনা, তেল চুরি করা যাবেনা। যে কারণে আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আমি বিএডিসি চেয়ারম্যান এবং সচিব মহোদয়কেও বিষয়টি জানিয়েছি। পরিশেষে আমি বাধ্য হয়েই আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হারুন-অর-রশীদের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে উল্টো সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
বিষয়টি পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.বিল্লাল হোসেনকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, তিনি খুবই নিন্দনীয় ও অপেশাদারমূলক আচরণ করেছেন। তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
পড়ুন: নদীর পাড় হতে কৃষকের মৃতদেহ উদ্ধার
দেখুন: চকলেটের চেয়ে কম দামে ফুলকপি, লাত্থি দিয়ে ফেলে দিচ্ছেন কৃষক! |
ইম/