কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (১২ জুলাই) সরকারি কাজে বাধা, পুলিশ সসদ্যদের আঘাত ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় আসামি হিসেবে সুনির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।’
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সাড়ে ৩টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। সেই মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জড়ো হয়ে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনিভাবে সরকারি দায়িত্ব পালনে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করে শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে।
মামলার বাদী খলিলুর রহমান বলেন, বিএসএমএমইউর পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে অনেক সংখ্যক আন্দোলনকারী উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করে এবং ওয়াটার ক্যানন ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করে। এ সময় ছাত্ররা বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপ টেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারে।
একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগদান করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে আহত করে এবং বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কটুক্তি করতে থাকে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। তারা চলতি মাসের শুরু থেকে সড়ক-মহাসড়ক এমনকি রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ‘বাংলা ব্লকেড’ চলাকালে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহতও হয়েছে।
এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।