বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অনুযায়ী ক্যান্সারের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খোঁজার আহ্বানে, বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫ উদযাপন করা হচ্ছে ।
উন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্যান্সার চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনো বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, উন্নত চিকিৎসা, গবেষণা এবং টেকসই স্বাস্থ্যনীতি গ্রহণের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১.৫ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন,
যার মধ্যে অধিকাংশই দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে মৃত্যুবরণ করেন। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট (NICRH)-এর মতে, বাংলাদেশে ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ ধরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ফুসফুস, মুখগহ্বর, স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার।
বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হলো পর্যাপ্ত ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের অভাব, ব্যয়বহুল চিকিৎসা, সচেতনতার অভাব ও দেরিতে রোগ নির্ণয়, উন্নতমানের গবেষণা ও পর্যাপ্ত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের অভাব।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ও বাংলাদেশে ক্যান্সার প্রতিরোধ
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG) ৩-এর মূল লক্ষ্য ‘সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা’। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য নিচের কয়েকটি দিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক পরিশ্রম, ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা গ্রহণসহ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। বিশেষ করে স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫-এর প্রতিপাদ্য:
এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইউনাইটেড বাই ইউনিক’ অর্থাৎ স্বকীয়তার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। বাংলাদেশে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে চিকিৎসার পার্থক্য স্পষ্ট, যা দূর করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
বাংলাদেশে ক্যান্সার প্রতিরোধে সরকারি পদক্ষেপ, গবেষণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৫-এ আমাদের অঙ্গীকার হোক—সমতার ভিত্তিতে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং ক্যান্সারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা!
দেখুন:দাঁতের ক্যান্সার হওয়ার কারণ কী? |
এসএম/ইম/