নতুন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কমিটি ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই পদত্যাগ করেছেন রিফাত রশীদ। জুলাই আন্দোলনের এ সমন্বয়ক ছাত্রসংগঠনটির সিনিয়র সদস্য সচিব পদে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক স্ট্যাটাসে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ থেকে সরে দাঁড়ানো এবং সংগঠনটির আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মধুর ক্যানটিনে সৃষ্ট বিক্ষোভ ও হাতাহাতির ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
রিফাত রশীদ লিখেন, গতকালকের ঘটনা স্পষ্ট করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। তার আগেই জানিয়ে রাখি, নতুন ছাত্রসংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই কমিটিতে আমার নাম ঘোষণা করার আগে আমার থেকে কনফার্মেশন নেয়া হয়নি। দফায় দফায় আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলত অনুমতি ব্যতীত আমার নাম কমিটিতে রাখায় আমি এই পদ থেকে সরে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) পুরো সাংগঠনিক সেট আপ, লিডারশিপ থেকে শুরু করে বৈছাআ’র পেজকেও (ফেসবুক পেজ) নতুন ছাত্রসংগঠনের প্রোমোশনে কাজে লাগানো হয়েছে। কিন্তু বৈছাআকে একটি সংগঠন আকারে যারা এতদিন টেনে নিয়ে গেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি, তাদের অংশগ্রহণ ছিল না খুব একটা ছাত্রসংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে। বিশেষত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবার কালেক্টিভ একটি ক্ষোভ সেখানে উপস্থিত ছিল। সবার প্রশ্ন ছিল, যদি স্বতন্ত্র উদ্যোগ হয় তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সেট আপকে কেন ব্যবহার করা হচ্ছে ছাত্রসংগঠন নির্মানের ক্ষেত্রে? এই প্রশ্নটাই বারবার করা হয়েছে।
রিফাত রশীদ দাবি করেন, অভ্যুত্থানের পর সবাই যখন টকশো করে বেড়িয়েছে, থানা-ডিসি অফিস-সচিবালয়ে ঘুরেছে, বিভিন্ন পলিটিকাল স্ফেয়ারে-এম্বাসিতে গিয়েছে, বিদেশে ডেলিগেট হয়ে স্পিচ দিয়ে বেড়িয়েছে, আমি তখন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোতে গিয়েছি, ঢাকার অলিগলিতে গিয়েছি। এইটা আমার রাজনৈতিক এম্বিশনেরই অংশ। অভ্যুত্থানের পর আমি এই এম্বিশনের পথেই হেঁটেছি। এইটা আমার চয়েজ ছিল।
তিনি বলেছেন, ‘নতুন ছাত্র সংগঠনে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল আমি সদস্য সচিব হবো। এরপর আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে মুখ্য সংগঠক, পরবর্তীতে সেখান থেকেও সরিয়ে মুখপাত্র করার প্রস্তাবনা করে। সবশেষে সেখান থেকেও মাইনাস করে আমাকে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে আসার প্রস্তাব করে। মুখপাত্র পোস্ট পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রেই আমি কালেক্টিভ স্বার্থের কথা ভেবে মেনে নিয়েছি। যখন যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয় তখন আমি স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেই, এই ছাত্র সংগঠনে আমি থাকবো না। এইটা জানিয়ে দেয়ার পর আর কোনো মিটিং, সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি এবং লিটারেচার টিমের কোনো কাজের সাথেই যুক্ত ছিলাম না। আমি পুরোপুরি এই সংগঠন গঠনের সমস্ত প্রসেস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম। প্রাইভেট ও মহানগর থেকে সার্চ কমিটিতে রিপ্রেজেনটেটিভ দিয়ে গিয়েছিলাম। তাদেরকে পজিট করানো আমার দায়িত্ব ছিল, আমি সেই দায়িত্ব পালন করে সরে গিয়েছি।
পড়ুন : সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে থাকা বেশি প্রয়োজন : নাহিদ ইসলাম