ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ১ মার্চ শনিবার থেকে গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারও ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়েছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার বিষয়ে সহমত না হওয়ায় ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এই হামলায় ৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও,
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একাধিক চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজার বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, যার ফলে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একে অপরকে সন্দেহ করে হামলা চালানোর দাবি করলেও, যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে এমন হামলার ঘটনা অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, গত রোববার গাজা উপত্যকার দক্ষিণ অংশে খান ইউনিসের আল-ফারহিন এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একজন নারী নিহত এবং আরও দুজন আহত হয়েছেন। এর আগে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি স্নাইপারদের গুলিতে এক ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং আরও দুজন আহত হন। এর পর বেইত হানুন এলাকায় ড্রোন হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ১১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৪৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে আরও বাড়াতে সম্মতি দিলেও হামাস এই শর্তে রাজি হয়নি। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে হবে এবং গাজার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। হামাস আরও দাবি করেছে যে, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে চলতে হবে এবং অবিলম্বে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য আলোচনা শুরু করতে হবে।
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে প্রায় ১৫ মাসের ব্যাপক সংঘর্ষের পর ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে গাজার ওপর আক্রমণ চালিয়ে আসছিল।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইতোমধ্যেই ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
এ পরিস্থিতিতে, যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভাঙার পরও হামাস গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং স্থায়ী শান্তির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একইসাথে, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন জানিয়েছে, যাতে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
পড়ুনঃ রমজানে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে ইসরাইল রাজি
দেখুনঃযেভাবে ভারত থেকে পাচার হচ্ছে গাঁজা |
ইম/