গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও বিভিন্ন নিরাপত্তা অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ। বুধবার (১৭ এপ্রিল) তিনি বলেন, যেকোনো অস্থায়ী বা স্থায়ী পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই সেনাদের এসব ‘বাফার জোনে’ রাখা হবে। একই পরিকল্পনা লেবানন ও সিরিয়া সীমান্তের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
কার্তজ জানান, তিন সপ্তাহ আগে গাজায় নতুন অভিযান শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনের দশ শতাংশ ভূখণ্ড ইসরায়েল দখলে নিয়েছে। তিনি বলেন, “এবার অতীতের মতো হবে না। যেসব এলাকা পরিষ্কার করে দখল করা হয়েছে, সেগুলো আর ছাড়া হবে না।” তাঁর মতে, আইডিএফ এসব অঞ্চলে শত্রু ও ইসরায়েলি জনগণের মাঝে একটি সুরক্ষাবলয় হিসেবে থাকবে।
এদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা কেবল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে যদি ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে, অবরোধ তুলে নেয় এবং পুনর্গঠনের প্রকৃত নিশ্চয়তা দেয়। অন্যথায় যেকোনো যুদ্ধবিরতি হবে “একটি রাজনৈতিক ফাঁদ”।
গাজায় আটক জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের অগ্রাধিকার নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ‘দ্য হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ কার্তজের পরিকল্পনাকে “উদ্ভট কল্পনা” আখ্যা দিয়ে বলেছে, একমাত্র বাস্তব সমাধান হচ্ছে একটি চুক্তির মাধ্যমে সব জিম্মিকে এক ধাপে মুক্তি দেওয়া, প্রয়োজনে যুদ্ধ বন্ধ করেও। তাদের অভিযোগ, সরকার জিম্মিদের চেয়ে ভূখণ্ড দখলে বেশি আগ্রহী।
ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনা ও সাবেক সেনারাও সরকারের নীতির সমালোচনা করে খোলা চিঠি দিয়েছেন। তাদের মতে, যুদ্ধের পরিবর্তে জিম্মিদের মুক্তিই হওয়া উচিত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
বর্তমানে ধারণা করা হয়, হামাসের হাতে গাজায় ৫৯ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে জীবিত আছেন ২৪ জন। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের দেওয়া ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। ওই প্রস্তাবে হামাসকে অস্ত্র ফেলে দিতে এবং কেবল অর্ধেক জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ শুরু হয় ২ মার্চ, আর ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে হামলা শুরু করে আইডিএফ। সেই সময় থেকে অন্তত ১ হাজার ৬৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পুরো যুদ্ধজুড়ে নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার জবাবে গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলায় ইসরায়েলের ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ২৫ ফিলিস্তিনি
দেখুন: গা/জা/র শি/শু/দে/র চিৎকারে থামেনি ঘা/ত/কে/র বো/মা |
ইম