২১/০৫/২০২৫, ১৭:৫২ অপরাহ্ণ
25 C
Dhaka
২১/০৫/২০২৫, ১৭:৫২ অপরাহ্ণ

গাজায় ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরায়েলের, আছে যেসব শর্ত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য ইসরায়েল নতুন একটি ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়। রয়টার্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রস্তাবনার বিশ্লেষণে জানা গেছে, এর মধ্যে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথমত, প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহে হামাস আটক থাকা ১০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার বিপরীতে, ইসরায়েল সরকার ১২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। দ্বিতীয়ত, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের অভিযান সীমিত করে আগের যুদ্ধবিরতির মতো নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান করবে, যেমন র ছাউনিগুলোর কাছাকাছি। তৃতীয়ত, ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করবে এবং পুনর্গঠন কাজ শুরু হবে। চতুর্থত, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। পঞ্চমত, হামাসকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পরিত্যাগ করার জন্য বলা হয়েছে এবং বর্তমান জিম্মিদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

ইসরায়েলের এই প্রস্তাব ইতোমধ্যে হামাসের কাছে পৌঁছেছে এবং গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবু জুহরি জানিয়েছেন, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে। তবে, হামাস নেতারা ইসরায়েলের শর্ত, বিশেষ করে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পরিত্যাগ করার দাবিটি অস্বীকার করেছেন। হামাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়, তবে তারা গাজায় আটক ইসরায়েলিদের মুক্তি দেবে।

পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ওই হামলার পর থেকে ইসরায়েল ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হলেও, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে মতানৈক্য হওয়ায় ১৮ মার্চ থেকে আবারো ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালাতে শুরু করে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলমান এই সংঘর্ষে ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৫৬ শতাংশ নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা, একদিকে যেমন বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি ঘটিয়েছে, তেমনি মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ বসতভিটে হারিয়েছে, এবং চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তার সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।

মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো—মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র—আশা করছেন, হামাস শিগগিরই ইসরায়েলের প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দেবে। মিসরের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস এখন ভালভাবে জানে যে সময় কত মূল্যবান এবং তারা আশা করছে প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাবে। তবে, এটি এখনো নিশ্চিত নয় যে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি সম্ভব হবে কি না।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইসরায়েলি বাহিনী সর্বদা সেখানে উপস্থিত থাকবে। ইসরায়েল এই অবস্থা ধরে রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে, হামাসের শর্ত এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যে সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করা এক কঠিন কাজ হতে পারে।

এখন পর্যন্ত, জনগণ যুদ্ধের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে, এবং যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। আশা করা যাচ্ছে, এই নতুন প্রস্তাব পরিস্থিতি কিছুটা হলেও শিথিল করতে সক্ষম হবে, যদিও চূড়ান্ত সমাধান আরও সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

পড়ুন: গা/জা/র শি/শু/দে/র চিৎকারে থামেনি ঘা/ত/কে/র বো/মা 

দেখুন: গাজায় সেনা রাখার ঘোষণা দিলেন ইসরায়েল প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইম

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন