ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) আরও ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান আগ্রাসনে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২৬৬ জনে।
আল জাজিরা ও আনাদোলুর প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাতভর বোমা বর্ষণ চালায়। এদিন আল ডোরা শিশু হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। গাজার পশ্চিম অংশে একটি ঘরবসতি লক্ষ্য করে বিমান হামলায় একই পরিবারের সাতজন নিহত হন। নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলায় নিহত হন দুই শিশুসহ তিনজন বেসামরিক নাগরিক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গাজা শহরের আল-তুফাহ এলাকায় অবস্থিত শিশু হাসপাতালের আইসিইউ ও সৌর প্যানেল লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে গুরুতর আহত হন বেশ কয়েকজন, যাদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন এক লাখ ১৬ হাজার ৯৯১ জন। যুদ্ধের ভয়াবহতায় এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ধ্বংস হয়ে যাওয়ায়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যেই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলি আগ্রাসনে।
ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি জানিয়েছেন, গাজায় বর্তমানে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। গাজার বাইরে আটকে আছে সাহায্যবাহী প্রায় ৩ হাজার ট্রাক, যা ইসরায়েল প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। শিশু, নারী ও বয়স্কদের জীবন ঝুঁকিতে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এ মানবিক বিপর্যয় থামার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে আশঙ্কা করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি
দেখুন: আর্জেন্টিনাসহ যেসব দেশে গাঁজা সেবন বৈধ
ইম/