গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নতুন করে চালানো বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২৫ জন। বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু, যা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২ হাজার ৯৩০ জনে। এছাড়া সংঘাতে আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৬ জন। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
দীর্ঘ ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। এরপর প্রায় দুই মাস শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকলেও, গত মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে পুনরায় আকাশপথে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যই এই পুনরায় হামলার কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৭ হাজার ৮০০ জনের বেশি। এই হামলা কার্যত জানুয়ারিতে ঘোষিত যুদ্ধবিরতিকে লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলমান আগ্রাসনের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার বেশিরভাগ অবকাঠামোও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার শুনানি চলছে।
গাজার এই মানবিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ আরও জোরালো করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশুসহ ২৬ ফিলিস্তিনি নিহত
দেখুন: ইউক্রেনের পর গাজা সংঘাতেও যুক্তরাষ্ট্র—রাশিয়ার পরোক্ষ যুদ্ধ
ইম