যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা ইস্যুতে তার পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। বুধবার তিনি ঘোষণা করেছেন, গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা নেই। ওয়াশিংটনে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিনের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প বলেন, “গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে কেউ বিতাড়িত করছে না এবং এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।”
এর আগে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প গাজা উপত্যকার মালিকানা গ্রহণের জন্য একটি বিতর্কিত প্রস্তাব দেন। তিনি গাজাকে একটি আধুনিক শহর এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। তার প্রস্তাবে, সেখানে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র স্থানান্তর করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। এই পরিকল্পনা ছিল গাজাকে পুনর্গঠন করে, সেখানে নিরাপত্তাহীন ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা প্রদান করার উদ্দেশ্যে।
তবে, কিছুদিন পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। বিশেষ করে, ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর করার বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়, কারণ এতে দীর্ঘদিনের ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হওয়ার ভয় আরো তীব্র হয়ে ওঠে। এ ছাড়া, মিশর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশগুলো এর বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেয়, যা গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলস্বরূপ, আরব দেশগুলো পুনর্গঠন নিয়ে একটি নতুন পরিকল্পনা প্রবর্তন করে, যাতে ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজস্ব ভূমিতে ফিরে যেতে পারবে এবং তারা বাস্তুচ্যুত হবে না।
এদিকে, ট্রাম্পের এক বিবৃতিতে, তিনি ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার কথা পুনরায় উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, অনেকেই এই হামলার বিষয়টি ভুলে যাচ্ছেন। এই হামলায় ইসরাইলের জনগণের উপর হামলা চালানো হয়েছিল এবং ট্রাম্প জানান, তিনি ইসরাইলের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করছেন এই সমস্যার সমাধানের জন্য।
এই পরিবর্তিত অবস্থানের ফলে ট্রাম্পের পূর্ববর্তী নীতি এবং বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। তার প্রস্তাবের প্রতি ইসরায়েলের কট্টরপন্থি দলগুলোর সমর্থন ছিল, তবে এই অবস্থান পরিবর্তন অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হচ্ছে। বিশেষ করে, ইসরায়েলি রাজনীতিবিদরা দখলের পক্ষ থেকে সরে আসার পর, ট্রাম্পও তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
এখন, মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো পুনর্গঠন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মনে করছে, যদি পুনর্গঠন পরিকল্পনা মিসরীয় মডেলের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, তবে তা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে এবং ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার বিপরীতে দাঁড়াবে।
পড়ুন : গাজায় বিদ্যুৎ-খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া যুদ্ধাপরাধ : হামাস
দেখুন : আর্জেন্টিনাসহ যেসব দেশে গাঁজা সেবন বৈধ
ইম/