গাজীপুর মহানগরীর শিমুলতলী এলাকায় অনুমোদনহীন মেলায় চলন্ত নাগরদোলা হেলে পড়ে বেশ কয়েকজন আরোহী আহত হয়েছেন। পরে খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
স্থানীয়রা জানায়, মহানগরীর শিমুলতলী এলাকায় সেনানিবাসের কাছে বিএমটিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্মা ফ্যাক্টরির জন্য নির্ধারিত স্থানে আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলার শুরু থেকেই মেলা চত্বরে নাগরদোলা চলছিল।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টম্বর) বিকেল ৫টার দিকে নাগরদোলায় চড়েন ২৫-৩০ জন দর্শনার্থী। হঠাৎ চলন্ত নাগরদোলা হেলে পড়ে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। মেলাটি আয়োজনের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসন বা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি নেওয়া হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই কড়া নিরাপত্তায় আহতদের উদ্ধার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। এ সময় ছবি তুলতে চাইলে সাংবাদিকদেরও বাধা দেয়া হয়।
খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস ছামাদের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর তিনি বলেন, মাঠের নিচে বালু থাকায় তা ডেবে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সাধারণত বালুর ওপর এতো বড় নাগরদোলা বসানোর নিয়ম নেই। তবে কর্তৃপক্ষ কার অনুমতি নিয়ে এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নাগরদোলা বসিয়েছে তা তাদের জিজ্ঞেস করা উচিত।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, মেলার অনুমতির জন্য আমাদের কাছে কেউ আবেদন করেনি। তাই আমরা কোনো অনুমতি দেইনি।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, জেলা প্রশাসকের নিকট কেউ কোন আবেদন করেনি, তাই মেলা আয়োজনের অনুমতি দেয়ার প্রশ্ন অবান্তর।
গাজীপুর জেলার প্রশাসনেরর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মেলা পরিপত্র ২০২৪ অনুযায়ী জেলা ও মহানগর এলাকায় এক মাসের জন্য মেলার অনুমতি দিতে পারেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু এ মেলা আয়োজনের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর কোনো আবেদই করেনি কর্তৃপক্ষ। তারা একটি অবহিতকরণ চিঠি দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর অননুমোদিত মেলা বন্ধ করার জন্য আমরা মহানগর পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।
তিনি আরো জানান, মেলার বিষয়ে পার্শ্ববর্তী ডুয়েটের শিক্ষার্থীরাও আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে।
এ বিষয়ে মেলা আয়োজকদের একজন দাবি করে মাহমুদ বলেন, মেলার অনুমতি দিয়েছে সেনাবাহিনী। যদিও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফারী সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদেরকে শুধুমাত্র জানানো হয়েছিল। তবে আমরা মেলার কোনো অনুমতি দেইনি।
এই মেলার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ডুয়েট সচেতন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবরের একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বিএনপিএফ আর্মি ফার্মা মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। আবেদনে চারটি সমস্যার কথা তুলে ধরে চার দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে কারা বসিয়েছেন এই অনুমোদনহীন মেলা?
পড়ুন: ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
দেখুন: বিয়েতে কনের হাতে মাংসের চেয়েও দামি পেঁয়াজের তোড়া
ইম/


