২১/০৬/২০২৫, ২৩:৫৪ অপরাহ্ণ
28 C
Dhaka
২১/০৬/২০২৫, ২৩:৫৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন


চট্টগ্রামে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতি।

নগরীর একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমানের নেতৃত্বে হাউজি রফিক, শাহনেওয়াজ, ও শাহ আলম প্রকাশ এসি শাহ আলম (বর্তমানে মৃত) বসুধার অফিস এবং পার্কিং দখল করে অবৈধ ভাবে ৮৪ টি দোকান নির্মান করে।

একেকটি দোকান বিক্রি করে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকায়। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ সিডিএতে অভিযোগ দায়ের করে বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতি।

সিডিএর তদন্তকারী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সতত্য পেয়ে ৭ দিনের মধ্যে এই অবৈধ স্থাপনা অপসারনের নোটিশ দেয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে বিষয়টি ধামাচাপা ছিল। ভূমিদস্যু চক্র আইনের মারপ্যাচ কাজে লাগাতে উচ্চ আদালতে রীট করে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসলেও “দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেড আপীল করলে উচ্চ আদালত সিডিএর নকশা অনুযায়ী স্থাপনা নির্মানের আদেশ দেন।

ফলে ভূমিদস্যু চক্রের রীট খারিজ হয়ে যায়। তবে পেশী শক্তি কারনে মুল বরাদ্দপ্রাপ্ত দোকানমালিক তাদের দোকান এখনো পর্যন্ত বুঝে পায়নি। দেশে আইনের শাসনে প্রতিষ্ঠা হলে ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে এই আশায় বুক বেধেছিল দোকান মালিকরা। কিন্তু এখনো ওই চক্র তাদের অপতৎপরতা থামায়নি। বরং লেবেলে ৫ এ গ্রাহকদের ১২৮ টি দোকান ভেঙ্গে ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করার কর্মকান্ড শুরু করেছে।

সম্প্রতি কোতোয়ালী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলাও নেয়নি অদৃশ্য কারনে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি রনজিত সরকার।

লিখিত বক্তব্যে বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি রনজিত সরকার বলেন, রেলওয়ে কর্মকর্তা -কর্মচারীদের আর্থিক উন্নতির বিষয়টি মাথায় রেখে ১৯১১ সনে সাবেক আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কো অপারেটিভ স্টোরস লিমিটেড এর নামে রেলওয়ে কতৃপক্ষ প্রায় ৭৬ হাজার একশত বারো বর্গফুট জায়গা র্দীঘ মেয়াদী লিজ দলিল সম্পাদন করে।

যার নামকরণ করা হয় “দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেড ”নামে। তারই প্রেক্ষিতে দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেড বানিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য দরপত্র আহবান করে। যাবতীয় নিয়ম কানুন সম্পাদন করে “মের্সাস রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট” নামের একটি প্রতিষ্ঠান ডেভেলাপার হিসেবে বহুতল ভবণ নির্মাণের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

কিন্তু রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট নামের প্রতিষ্ঠানটি মার্কেটের নির্মান কাজ ব্যয়বহুল হওয়ায় উক্ত নির্মান কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য মের্সাস এটকো হোল্ডিং নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে অংশীদার নিয়োগ করে। এ অবস্থায় “দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেডএর সাথে রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং নামীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে একটি ২০০৬ সালের ১৯ ফেব্রয়ারী ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর তারাও আর্থিক সংকটের কারনে বেশিদুর কাজ এগিয়ে নিয়ে পারেনি। ফলে রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং নামে দুই প্রতিষ্ঠান সর্বসম্মতিক্রমে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য “ মের্সাস বসুধা বির্ল্ডাস নামের ঢাকার একটি প্রতিষ্টানকে প্রস্তাব দিলে শর্তসাপেক্ষে মের্সাস বসুধা বির্ল্ডাস এই কাজের আগ্রহ প্রকাশ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০-১১-২০০৭ সালে রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং এর সাথে মের্সাস বসুধা বির্ল্ডাসের চুক্তি সম্পাদিত হয়। সাধারণ আমোক্তার নামা মূলে ক্ষমতা প্রদান করা হয় মের্সাস বসুধা বির্ল্ডাসকে।

সম্পূরক চুক্তিনামায় বসুধার ৭০% এবং রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং এর অংশীদারিত্ব ছিল ৩০%। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রেজিষ্ট্রার দলিলমূলে ৩০% বসুধা বির্ল্ডাস এর নিকট হস্তান্তর করে রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং। উল্লেখ্য ১১ কোটি ৫১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৯০২ টাকা ২৩ টি চেকের মাধ্যমে বসুধা বির্ল্ডাস পরিশোধ করে পুরো দখলস্বত্ত বুঝে নিয়ে নির্মান কাজ শুরু করেন। ফলে লেবেল টু থেকে লেবেল সিক্স পর্যন্ত একক মালিকানা লাভ করে বসুধা বির্ল্ডাস।

চুক্তি মোতাবেক বসুধা বির্ল্ডাস মার্কেটের নির্মান কাজ শুরু করলে “দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেড আপত্তি জানায়। এ অবস্থায় রিয়্যাল এস্টেট প্রাইভেট সিন্ডিকেট এবং মের্সাস এটকো হোল্ডিং গত ২০১০ সালের ৭ মার্চ রেলওয়ে মেনস স্টোর লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী বরাবর লিখিত অনাপত্তি প্রদান করলে “দি রেলওয়ে মেন্স ষ্টোরস লিমিটেড এর সাথে আরেকটি চর্তুপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়।

চুক্তি শর্ত অনুযায়ী ২য় পক্ষ তথা বসুধা বির্ল্ডাস “ বসুধা রেলওয়েমেন্স সিটি সেন্টার নামীয় ১০ম তলা মার্কেট নির্মানকারী বা ডেভেলপার হিসেবে গণ্য হবেন। এবং সিডিএর শর্তাসাপেক্ষে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা সিডিএ হতে পুণ: অনুমোদনের কাজ তদারকি করবেন। ১ম পক্ষ রেলওয়ে মেনস স্টোর লিমিটেড এই সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র স্বাক্ষর করবেন।

ভূমিদস্যু চক্র বসুধা বির্ল্ডাসকে উপর্যপুরি হুমকি দিলে তারা বসুধা রেলওয়ে মেন্স সিটি সেন্টার দোকান মালিক সমিতিকে মার্কেটের অবিক্রিত দোকান ও স্পেস বিক্রি করে অসর্ম্পূণ নির্মান কাজ সম্পন্ন করার জন্য২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর একটি চুক্তি করে।

সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

সমিতির সাধারণ. সম্পাদক এড. জাফরুল আলম, সহ সভাপতি এসএম ইব্রাহিম, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. কামাল, অর্থ সম্পাদক মনব্রত বনিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে রামুতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

দেখুন: চট্টগ্রামে চুলা জ্বলছে না; শুধু এলএনজিতে ভরসা ‘বিমাতাসুলভ’

এস

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন