চট্টগ্রামে সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে। ওয়াসার উৎপাদন কমে যাওয়ায় চরম ভোন্তির শিকার হচ্ছেন বিপুল ওয়াসার গ্রাহক। নিয়মিত পানি পাচ্ছেননা এ ররকম এলাকার সংখ্যাও কম নয়। নগরবাসীর এই ভোগান্তি যখন চরমে ঠিক সে সময়ে নতুন মোবাইল কেনা এবং ভ্রমণ বিলাসে মেতেছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মকর্তারা। সংস্থার ৯১ কর্মকর্তার জন্য মোবাইল ফোন কেনা এবং ২২ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ নিতে আজ অবস্থান করছেন কক্সবাজারে। ওয়াসার এমন কান্ডে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
তথ্যমতে, হালদা নদীতে লবণাক্ততা বাড়ায় এবং কর্ণফুলী নদীতে পানির স্থর কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসায় উৎপাদন কমেছে। মুলত দুই নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল ওয়াসার চারটি পানি শোধনাগার প্রকল্প। চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি লিটারের ফারাক। এই অবস্থায় তীব্র পানি সংকটে পড়েছে নগরীর অনেক এলাকার বাসিন্দারা।
দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত পানি পাচ্ছেনা নগরীর বাকলিয়া, হালিশহর, ডবলমুরিং, ধনিয়ালা পাড়া, আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা থানাধীন বাংলা বাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। পানি না পেয়ে ওয়াসা ঘেরাও কর্মসূচীও করেছে কিছু এলাকার লোকজন।
এদিকে ওয়াসার দুটি কর্মকান্ড নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ওয়াসা সুত্র জানায়, কর্মকর্তাদের মোবাইল কেনার জন্য ৬ মে চট্টগ্রাম ওয়াসা কতৃপক্ষ পত্রিকায় একটি ই-টেন্ডার নোটিশ দেয়। নোটিশে মোবাইল শব্দটি উল্লেখ করে ‘ইলেকট্রনিক ডিভাইস’-এর কথা বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব থেকে এ-বাবদ ব্যয় হবে ২২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধান প্রকৌশলী সহ ৯১ কর্মকর্তা রয়েছেন মোবাইল ফোন পাওয়ার তালিকায়।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসার ২০ কর্মকর্তা অবস্থান করছেন কক্সবাজারে। কক্সবাজার শহরের একটি পাঁচ তারকা হোটেল এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অবশ্য অফিস অনুমোদনের ভিত্তিতে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানা যায়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘দুর্নীতির নতুন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফরের সাথে এই কর্মশালাকে তুলনা করে তিনি বলেন, দুটোর উদ্দেশ্যই ভ্রমণ।’
এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন নাগরিককে জানান, বর্তমান সরকারের আমলে সু -শাসন, সচ্চতা, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে আশা করা হলেও তার বিন্দুমাত্র লেশ দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসায় গিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাউকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৭৮ হাজার ৫৪২টি আবাসিক গ্রাহক এবং ৭ হাজার ৭৬৭ টি আছে বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে। নগরীর অনেক এলাকায় এখনও পানির সংযোগ পৌঁছায়নি।
পড়ুন : চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নামিয়ে আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা