বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দর একমাত্র ভরসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে সত্যিকার বন্দরে পরিণত করার কাজ চলছে।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ১০ট্য় চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলনে।
ড. ইউনূস বলেন, বহুদিন ধরে ইচ্ছে ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে আসব এবং এর অগ্রগতির খোঁজ নেব, সবার সঙ্গে কথা বলব, এই অপেক্ষাতেই ছিলাম। চট্টগ্রাম বন্দর আমার কাছে অপরিচিত কোনো জায়গা নয়। ছাত্র অবস্থায়ই এখানে এসেছি, শুধু জাহাজ দেখার আগ্রহে। তখন জাহাজ থেকে মাল খালাসের দৃশ্য দেখেছিলাম—সেটা ছিল একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
‘কিন্তু বরাবরের মতোই দুঃখ একটাই, এই বন্দরের পরিবর্তন এত ধীরগতিতে কেন? দুনিয়ার সব কিছু পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু এখানে তেমন পরিবর্তন নেই। এটা আজকের প্রশ্ন না। যখন গাড়ি চলে না, ট্রাক আটকে যায়, মাল খালাস করা যায় না—তখন কতবার গুরুত্বপূর্ণ প্লেন মিস করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে মাঝে মাঝে কথা বলেছি, লেখালেখিও করেছি।’

বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান এবং সেখান থেকে সরাসরি এনসিটি-৫ টার্মিনালে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন ড. ইউনূস
সফরসূচি অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। তাকে চলমান কার্যক্রম ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে ব্রিফিং দেন বন্দর কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বন্দর-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল, লালদিয়া টার্মিনাল এবং এনসিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ আনার বিষয়ে আলোচনা প্রক্রিয়াধীন। এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার সফর বন্দর উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর সফর শেষে ড. ইউনূস সার্কিট হাউসে নগরীর জলাবদ্ধতা, সড়ক উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য খাতসংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক ব্রিফিং ও আলোচনায় অংশ নেবেন। এছাড়া চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের জন্য জমি বরাদ্দের দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত থাকবেন।

তিনি কালুরঘাট নতুন সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণেই। কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই সেতু বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি তাঁর পৈতৃক বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামও পরিদর্শন করবেন তিনি।
দেখুন: ইউনূস সরকারের ৫ বছর থাকা নিয়ে কী বলছে সাধারণ মানুষ? |