২৪/০৫/২০২৫, ১৫:৪৭ অপরাহ্ণ
32 C
Dhaka
২৪/০৫/২০২৫, ১৫:৪৭ অপরাহ্ণ

চাঁদপুরের হাইমচরে সৌদি বাদশার নামে ভাসমান হাসপাতাল

চাঁদপুরের হাইমচরের চরাঞ্চলে চালু হলো ভ্রাম্যমাণ ভাসমান চিকিৎসা কার্যক্রম। এতে খুশি চরের দুই লাখ বাসিন্দা। হাইমচরের ঈশানবালা, গাজীপুর ও নীলকমল ইউনিয়নের বাসিন্দা জন্মের পর প্রথমবারের মতো সহজে এমন চিকিৎসা সেবা পেলেন।

বুধবার হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের মেঘনা নদীর মিয়ারচরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান।

স্থানীয় বাসিন্দরা বলেন, এখানে চাঁদপুরে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত বেশ কয়েকটি দূর্গম চর। যেখানে চরবাসীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা ছিল সোনার হরিণ। স্থানীয়ভাবে সরকারি কি বেসরকারি, কোনো ধরণের স্বাস্থ্যসেবা পেতো না তারা। তবে এসব চরবাসীর মধ্যে নতুন করে আশার আলো ছড়িয়েছে বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতাল। এটি পরিচালনা করছে ফ্রেন্ডশীপ নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। যেখানে মিলছে সবধরণের স্বাস্থ্যসেবা।

বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতালের লক্ষ্য একটাই চরের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রাথমিক চিকিৎসা, রোগ নির্নয় থেকে শুরু করে ডেন্টাল, ফিজিওথেরাপি, চক্ষু চিকিৎসাসহ অস্ত্রোপচারের ব্যাবস্থা। সবকিছুই মিলছে একেবারে বিনামূল্যে। এতে হাতের নাগালে এমন স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে দারুণ খুশি চরবাসী।বিলকিস বেগম নামের এক রোগী বলেন, এর আগে ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উত্তাল নদী পেরিয়ে জেলা শহর কিংবা রোগের ধরণ দেখে ছুটতে হতো রাজধানী পর্যন্ত। তাও যাদের আর্থিক সামর্থ্য ছিল শুধুই তারা চিকিৎসা নিতো। আমাদের ব্যববহুল চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব না। এখানে ভাসমান হাসপাতাল হওয়ায় খুব উপকার পেয়েছি। বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন করেছি। একটাকা লাগেনি। আমি খুব খুশি।

ফ্রেন্ডশীপ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান জানান, প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী এই ভাসমান হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে। ৭ জন চিকিৎসকসহ ৩২ সদস্যের ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতালটিতে কার্যক্রম চলছে। হাইমচর সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২ লাখ মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এই কাজ করবে এই প্রকল্প।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, নদী বেষ্টিত দুর্গরাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায় না। এ স্বাস্থ্য সেবা দৃষ্টির করার লক্ষ্যেই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমান ভাসমান হাসপাতাল কার্যক্রম শুরু হয়। সব মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা পায় পরিকল্পিতভাবে আমাদের কার্যক্রম সেভাবেই চলছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ আবু জাফর, কিং আব্দুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আব্দুল আজিজ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিবসহ সৌদি আরব সরকারের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন সংস্থাটি কাছে প্রসূতিদের চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়ে বলেন, চরে সবচেয়ে বেশি প্রসূতিদের সমস্যায় পড়তে হয়। এই হাসপাতালে যদি প্রসূতিদের ডেলিভারি ব্যবস্থা যুক্ত করা হয় তাহলে আরো বেশি লাঘব হবে।

এই হাসপাতালের মাধ্যমে হাইমচরের প্রাশ দুই লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবেন। এটি চাঁদপুরসহ লক্ষীপুর ও ভোলা জেলায় অন্তত ২ মাস করে সেবা দিবে। সারাদেশে এমন ৫ টি ভাসমান হাসপাতাল রয়েছে।

পড়ুন : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বাশেঁর বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ অবরুদ্ধ: বিপাকে কয়েকটি পরিবার

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন