১৬/১১/২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ণ
28 C
Dhaka
১৬/১১/২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ণ
বিজ্ঞাপন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি ১০ হাজার পরিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার পানি বাড়ায় সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। সড়ক ডুবে প্রভাব পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি, উজানের ঢল ও ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় নদীতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যদিও পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়েই বইছে। কিন্তু জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১ হাজার ৮৮২ হেক্টর অর্থাৎ ১৪ হাজার ৫৯ বিঘা জমির রোপা আউশ, কলা, ভুট্টাসহ শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৭ হাজার ৯৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আহসান হাবিব জানান, পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। উজানের ঢলের চাপও কমেছে। আশা করা যায়, দুই দিন পর থেকে পানি কমতে শুরু করবে। এখন পর্যন্ত এটাকে পুরোপুরি বন্যা পরিস্থিতি না বলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি বলা যায়। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও সতর্কসীমা অতিক্রম করেছে।

সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ১৫ বছর বা তারও আগে যারা বসতভিটা উঁচু করে বাড়ি বানিয়েছেন, তাদের বাড়িঘরে কেবল পানি ঢোকেনি। কিন্তু নদীভাঙনের শিকার হয়ে যাঁরা বসতভিটা হারিয়ে নিচু এলাকায় বাধ্য হয়ে বাড়ি করেছেন, তাঁদের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এমন পরিবারের সংখ্যা ৫০০ থেকে ৬০০। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি।

এদিকে চাঁপাইনববাগঞ্জে নিম্নাঞ্চলের পাঁচটি ইউনিয়নের ৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেই পাঠদান চালিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, জেলা সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ১৩টি করে মোট ২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ছয়টি মাদরাসার অবস্থাও একই। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং একটি মাদরাসার শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। 
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলী প্রথম আলোকে বলেন, সদর উপজেলায় ১০ ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জলমগ্ন হয়েছে। আমরা চেষ্টায় আছি বিকল্প স্থানে পাঠদানের।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মতিন জানান, শিবগঞ্জে নয়টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সদর উপজেলার তালিকা এখনো তৈরি হয়নি, কাজ চলছে।

শিবগঞ্জের ইউএনও আজাহার আলী জানান, উপজেলার পাকা, দুর্লভপুর ও মনাকষা ইউনিয়নের ৪৯৩ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ওই সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
নারায়ণপুর ইউপিতে পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন সদরের ইউএনও মো. নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, অনেকে মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। ফসলের জমি নিমজ্জিত হয়েছে, এটাকে বন্যা পরিস্থিতিই বলা যায়। আর পানি না বাড়লে বা কমতে শুরু করলে এটাকে স্বল্পমেয়াদি বা অস্থায়ী বন্যা বলা যেতে পারে।

পড়ুন: সাদাপাথরে লুটপাট: ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আটক

দেখুন: ভারতে পাচারকালে সীমান্তে ৮০ হাজার ডলার জব্দ | 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

বিশেষ প্রতিবেদন