34.5 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় বৈশাখে ইলিশে ভাটা, ক্রেতাশূন্য বাজারে হতাশ ব্যবসায়ীরা

পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালির উৎসব, আর সেই উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ পান্তা-ইলিশ। প্রতিবছর নববর্ষ ঘিরে ইলিশের বাজার থাকে জমজমাট। কিন্তু এবার চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে ছিল একেবারেই ভিন্ন চিত্র। গতকাল রোববার (১৩ এপ্রিল) ও আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশ বিক্রিতে নেই কোনো জোয়ার। ব্যবসায়ীরা মাছ সাজিয়ে বসে থাকলেও ক্রেতারা ছিলেন হাতে গোনা। দাম তুলনামূলক কম হলেও ইলিশ বিক্রি হয়নি বললেই চলে—যা নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন বিক্রেতারা।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের মাছ বাজারে দেখা যায়, মাত্র চারজন বিক্রেতা ইলিশ বিক্রির চেষ্টা করছেন। তাদের একজন বলেন, “অন্যান্য বছর পহেলা বৈশাখের দু-তিন দিন আগেই ইলিশের ব্যাপক চাহিদা থাকত। হুড়োহুড়ি লেগে যেত। এবার মানুষ আসছেই না, আগ্রহও নেই।”

বাজারে দেখা গেছে, ইলিশের দাম তুলনামূলকভাবে কম—প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এরপরও বিক্রি একেবারেই মন্দা। একজন বিক্রেতা জানালেন, “গত বছর এই সময়ে দিনে ২০-৩০ কেজি বিক্রি হতো। এবার দিনে ৫ কেজিও বিক্রি হচ্ছে না। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না।”


ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা শাহারিয়ার হোসেন বলেন, “প্রতিবছর বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাই। এবার বাজারে এসে দেখি মাছ কম, আর দাম বেশি। মাঝারি সাইজের একটি ইলিশের দাম চাচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি। পরিবারের অন্য খরচ সামলে ইলিশ কেনা কঠিন। তাছাড়া ইলিশের স্বাদ নিয়েও অভিযোগ আছে—আগের মতো তাজা বা সুস্বাদু না। একটিমাত্র মাছ কিনেছি ৬০০ টাকায়, বাচ্চারা খেতে চেয়েছে তাই।”

মাছ ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, “গত ১০ বছর ধরে বৈশাখের আগে ইলিশ বিক্রি করি। এই সময়টায় ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। এবার সেই চিত্র নেই। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না। কেউ বলছেন মাছের স্বাদ নেই, কেউ বলছেন দাম বেশি। বৈশাখে ইলিশ বিক্রি না হওয়ায় আমরা খুবই হতাশ।”

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের নিচের অংশে বাজার করতে আসা শিউলি আক্তার নামের এক চাকরিজীবী নারী বলেন, “ছুটির দিনে বিশেষ রান্না করবো বলে বাজারে এসেছি। তবে পান্তা-ইলিশে আমাদের পরিবারের তেমন আগ্রহ নেই। বাচ্চারাও খেতে চায় না, তাই আয়োজন করিনি।”

এদিকে, বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ—এই চেনা আবেগ চুয়াডাঙ্গায় গতকাল ও আজ সকালে ছিল অনুপস্থিত। বিক্রেতারা বলছেন, মানুষের আগ্রহের ঘাটতির কারণ হয়তো অর্থনৈতিক চাপ, ইলিশের মান নিয়ে হতাশা কিংবা নতুন প্রজন্মের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। সব মিলিয়ে চুয়াডাঙ্গায় এবারের বৈশাখে ইলিশ বিক্রির বাজার ছিল একেবারেই মলিন।

পড়ুন : চুয়াডাঙ্গায় জুলাই যোদ্ধাদের মাঝে স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন