চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ।
আজ শুক্রবার (০৯ মে) বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই মাত্রায় তাপমাত্রা উঠেছে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো। বাতাসে আর্দ্রতা মাত্র ২৪ শতাংশে নেমে আসায় জনজীবনে তীব্র গরমের প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে উত্তপ্ত চুয়াডাঙ্গার মানুষ কার্যত ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।
গরমের তীব্রতায় শহরের বিভিন্ন সড়কের পিচ গলে যাচ্ছে। বিশেষ করে কোর্টরোড ও বড়বাজার এলাকার সড়কে এই দৃশ্য চোখে পড়ছে। এতে যান চলাচলেও ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, “বিভিন্ন সড়কে পিচ গলে যাওয়ার খবর পেয়েছি। সেসব স্থানে বালু ছিটানো হচ্ছে, যাতে যান চলাচলে সমস্যা না হয়। তবে গরম যদি আরও বাড়ে, তাহলে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হতে পারে।”
তীব্র তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালকরা রোদে নেমে কাজ করতে গিয়ে পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই সকাল থেকে না খেয়েই কাজ করছেন পানির অভাবে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের এক ভ্রাম্যমাণ বাদাম বিক্রেতা বলেন, “সারাদিন হেঁটে বাদাম বিক্রি করি। কিন্তু এই গরমে কেউ রাস্তায় নেই। বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেছে।”
গরমের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরাও। এক পোল্ট্রি খামারি বলেন, “বয়লার ও সোনালি জাতের মুরগি গরমে মারা যাচ্ছে। উপরন্তু লোডশেডিংয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। খামার টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।”
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, “৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা উঠলেই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে। তাই বাইরে না গিয়ে বেশি করে পানি ও ফলমূল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা জামিনুর হক জানান, “বর্তমানে জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি আগামী ১৩ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এনএ/