চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সীমান্ত নিরাপত্তা, সীমান্ত হত্যা শূন্যে আনা, অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এ বৈঠকে।
শনিবার (১৭ মে) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৯৬/৮-এস এর নিকট শূন্য রেখায় ভারতের গঙ্গরার কাছে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আজ বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান।
বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান এবং ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুয়া। উভয় পক্ষের স্টাফ অফিসার, কোম্পানি কমান্ডার ও ক্যাম্প কমান্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরুতে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান ও কুশল বিনিময় করেন। এরপর সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে ঠাকুরপুর থেকে মুন্সিপুর সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে ভারতীয় পার্শ্বে অবৈধভাবে পোস্ট ও বাংকার নির্মাণ, কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন এবং শূন্য রেখা এলাকায় ড্রোন উড্ডয়নসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না।
এছাড়া বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে কিছু ভারতীয় নাগরিককে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পুশইন করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিজিবি অধিনায়ক। এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বিএসএফ কমান্ড্যান্টকে আহ্বান জানান তিনি।
বিএসএফ কমান্ড্যান্ট জানান, বর্ষা মৌসুমে টহল কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে পুরাতন পোস্ট সংস্কার করা হয়েছে, নতুন করে কোনো স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি। সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থানীয়দের খেলনা ড্রোন উড়ানোর বিষয়টি বিএসএফ কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ করেছে বলেও জানান তিনি।
চোরাচালান প্রসঙ্গে বিএসএফ কমান্ড্যান্ট বলেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু চোরাচালান রোধে গঙ্গরা ক্যাম্প এলাকার অরক্ষিত সীমান্তে অস্থায়ীভাবে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হয়েছে। তবে তিনি বিজিবির উদ্বেগের বিষয়ে একমত পোষণ করে জানান, চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে কোনো ধরনের পুশইন ঘটনা ঘটবে না।
বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান প্রতিরোধ, টহল জোরদার ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়ে দুই বাহিনীর কমান্ডার একমত পোষণ করেন। পাশাপাশি, সীমান্ত রক্ষায় সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং যেকোনো ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন উভয় পক্ষ।
পতাকা বৈঠক শেষে বিজিবি ও বিএসএফ প্রতিনিধি দল সীমান্ত মেইন পিলার ৯৭ এবং আশপাশের সাব-পিলার ও টি-পিলারসমূহ যৌথভাবে পরিদর্শন করেন।
পড়ুন: ভারতে পাচার হওয়া ৬ নারী বেনাপোলে হস্তান্তর
দেখুন: বেনাপোলে বিজিবির হাতে ‘মাদক সম্রাট’ বাদশা মল্লিক আটক
ইম/