দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে চুয়াডাঙ্গা তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্নসাধারণ সম্পাদককে স্থায়ী ভাবে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বিএনপির সাবেক নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তে তাদের বহিস্কার করা হয়। রোববার রাতে দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি মো. খাজা আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী যৌথ স্বাক্ষরে তাদের দল থেকে বহিস্কার করে।
চুয়াডাঙ্গা দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি মো. খাজা আবুল হাসনাত জানান, তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাশেম টোটন ও যুগ্নসাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিককে হত্যার সাথে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। তিনজনের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা যায় গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী কার্যকালাপে লিপ্ত রয়েছেন। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ও দলের সুনাম ক্ষুণœ হয়েছে। গঠনতন্ত্রের আলোকে ও দলের স্বার্থ রক্ষার্থে জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তে পদ থেকে স্থায়ী ভাবে অব্যাহতি ও দল থেকে বহিস্কার করা হল।
তিনি আরও বলেন, ওরা তিনজন একজন নেতাকে মার্ডার করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ আছে দলে কোন অনৈতিক কাজ, চাঁদাবাজি করলে দলে রাখা যাবে না। রফিক হত্যার ন্যায় বিচার চায় আমরা। তার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে দল। মুল তিন ক্রিমিনালের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রথম থেকে ব্যবস্থা নিলে এমন ঘটনা ঘটতো না।
তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামি। সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৩ নং আসামি।
হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত পুলিশ চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ানের হুলিয়ামারি গ্রামের মৃত শরীফ উদ্দিনের ছেলে তাসলিমুজ্জামান সাগর মেম্বর, গ্রীসনগর গ্রামের খালেক ত্রীপুরার ছেলে বিল্লাল হোসেন ও একই গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে আছের উদ্দিন মান্দারকে গ্রেফতার করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ানে টিসিবি ও ভিজিএফের চালের কার্ড নিয়ে রফিকুল ইসলাম রফিকের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটনের সাথে। শনিবার সকালে বিষয়টি আপোষ-মীমাংসা করার কথা বলে রফিককে ঢেকে নেয় মিলন মিয়া ও আবুল হাশেম টোটন। রফিককে ইউনিয়ন বিএপির নেতাসহ তাদের সহযোগিরা মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাতে গ্রামের কবর স্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় রোববার নিহতের স্ত্রী নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন দর্শনা থানায়।
শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত দর্শনা থানা পুলিশ তিতুদহ ইউনিয়ানের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় তিন আসামি তাসলিমুজ্জামান সাগর মেম্বর, বিল্লাল হোসেন ও আছের উদ্দিন মান্দারকে গ্রেফতার করে।
পড়ুন: চুয়াডাঙ্গার তিতুদহে সংঘর্ষে সাবেক বিএনপি নেতা নিহত, আহত ২
দেখুন: নতুন পদ্ধতিতে চুয়াডাঙ্গায় গরমকালেও পেঁয়াজ চাষ |
ইম/