০৮/০৭/২০২৫, ২১:৩৮ অপরাহ্ণ
26.1 C
Dhaka
০৮/০৭/২০২৫, ২১:৩৮ অপরাহ্ণ

চোকার্স তকমা ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বজয়

পেন্ডুলামের মতো দুলেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের ভাগ্য। লড়াইয়ে কখনো অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ছিল, কখনও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে প্রোটিয়ারা। আর তাতে অভিশপ্ত চোকার্স তকমা ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা।

ফাইনালের প্রথম দিনে টস জিতে বোলিং নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ শেষে অন্তত এটা স্পষ্টভাবেই বলা যায়, ওই টস জয়ই দক্ষিণ আফ্রিকার অর্ধেক কাজটা করে দিয়েছিল। কারণ দ্বিতীয় দিনের পর ব্যাটিং সহজ হয়ে যাওয়ার তার পুরো সুবিধাটাই পেয়েছেন এইডেন মার্করাম- টেম্বা বাভুমারা।

ম্যাচের শেষদিকে পিচ ব্যাটিং সহায়ক হয়ে যাওয়া মিচাল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স এবং জশ হ্যাজেলউডদের মতো বোলাররা কোনো সুইং পাচ্ছিলেন না। অভিজ্ঞ নাথান লায়ন বল স্পিন করাতে পারলেও ভাঙতে পারেননি মোকামদের প্রতিরোধ। তাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ২৮১ রান ডিফেন্ড করতে পারেনি অজিরা। ভাগ্যদেবতাও হয়তো এটাই চেয়েছিলেন। চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রান তাড়া করে ৫ উইকেটের জয় ছিনিয়ে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আফ্রিকার বিশ্বজয়ের বড় নায়ক মার্করাম। এক বাক্যে বলতে গেলে, তার অপ্রতিরোধ্য ইনিংসটাই দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম বিশ্বজয়ের মুকুট এনে দিয়েছে। ২০৭ বলে ১৩৬ রানের ইনিংসে একজন টেস্ট ব্যাটারের মধ্যে যা থাকা দরকার সবকিছুই ছিল। দায়িত্বশীলতা, তীব্র মনোযোগ এবং ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী শট খেলা, সবকিছুই দেখিয়েছেন মার্করাম। তাই একটা ইনিংসই প্রমাণ করে একবার ওই বিশ্বকাপ জয়ের জন্য কতটা মুখিয়ে ছিল প্রোটিয়ারা। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে আউট হন প্রোটিয়া এই ব্যাটার। তবে ততক্ষণে জয়টা নিজেদের ঝুলিতে নিয়ে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমার কথাও না বললেই নয়। দলের সবচেয়ে প্রয়োজনের সময় ১৩৪ বলে ৬৬ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। ৫ ঘণ্টারও অধিক সময় উইকেটে ছিলেন বাভুমা। তবে এর মধ্যে অর্ধেক সময়ই দৌড়েছেন খুড়িয়ে খুড়িয়ে। প্রথম ইনিংসেও তার ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান। দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে দারুণ প্রতিরোধ দেখিইয়েছেন ডেভিড বেন্ডিংহাম। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

জয়ের আরেক বড় তারকা কাগিসো রাবাদা। দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার নিজেকে প্রমাণ করেছেন বড় মঞ্চে। দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি নিয়েছেন ৯ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মার্কো জেনসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট গেছে লুঙ্গি এনগিডির ঝুলিতে।

টস জিতে বোলিং নিয়ে প্রথম ঘণ্টায়ই অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জেনসেন-রাবাদার তোপে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় অজিরা। মার্নাস লাবুশেন ও উসমান খাজার উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রাবাদা। প্রথম স্লিপে আদায় করে নেন খাজার উইকেট। দ্বিতীয় উইকেটের জন্য রাবাদাকে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ওই ওভারেই তুলে নেন ক্যামেরন গ্রিনকে। গ্রিন ক্যাচ দেন স্লিপে দাঁড়ানো এইডেন মারক্রামকে।

লাবুশেনও ইনিংস বড় করতে পারেননি। উইকেটরক্ষক কাইলে ভেরাইনের গ্লাভসে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন জেনসেন। গত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের নায়ক ট্রাভিস হেড ফেরেন মাত্র ১১ রানে।

অভিজ্ঞ স্টিভ স্মিথ এবং বেউ ওয়েবস্টারের ব্যাটে শুরুর ৪ উইকেটের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চম উইকেটে ৭৯ রান তোলে এই জুটি। ৬৬ রান করেন স্মিথ। ওয়েবস্টারও পান ফিফটির দেখা। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।

পড়ুন : দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন