জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শাখা ছাত্রদলের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘জাগোনিউজ২৪.কম’-এর জাবি প্রতিবেদক সৈকত ইসলামকে হুমকি প্রদান ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের প্রতি আপত্তিকর শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন সড়কে কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এবং বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রসংসদ এবং শিক্ষার্থীরা।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম- আহ্বায়ক তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, আমরা সেটা গত ৫ আগস্টেই বাক স্বাধীনতার ও স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের উপর হস্তক্ষেপ যে নোংরা রাজনীতি তা ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। যারা আবার নতুন করে বাক স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের উপর হস্তক্ষেপ করতে চান তাদেরকেও আমরা ছুড়ে ফেলে দেব। গত ১৫ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরাসহ দেশের অন্যান্য সাংবাদিকরা জেল-জুলুম, ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করে এসেছে। জুলাই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহত সাংবাদিকদের রক্তমাখা ছবি আমাদের আন্দোলনে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আমরা সেই জাহাঙ্গীরনগরের সাংবাদিকদের দেওয়া ভয় ভীতি ও চাপ বরদাস্ত করবো না।
জাবি প্রেসক্লাব এর সভাপতি ওয়াজহাতুল ইসলাম বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরেও সাংবাদিকদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। আজও তাদের হুমকির মুখে পরতে হচ্ছে সংবাদ লেখার জন্য। সাংবাদিকের লেখার কোনো ভুল হলে একটি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিবাদ করা যায়।কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তা না করে পেশি শক্তির মাধ্যমে নিউজ ছড়িয়ে ফেলতে চাপ প্রয়োগ করেন এবং সাংবাদিকের উদ্দেশ্য করে যে শব্দ উচ্চারণ করেছে তা খুবই নিন্দা জনক। তাই ছাত্রদল কর্তৃক দ্রুত এরূপ কাজের জন্য ক্ষমা চেয়ে,নিজেদের মধ্যে থাকা অপকর্মগুলোর তদন্ত করা উচিত।
জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও বণিক বার্তার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মেহেদী মামুন বলেন, ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। তখন তাদের পাশে সাংবাদিক ছাড়া আর কাউকেই পাওয়া যায়নি। অথচ এখন তারাই সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছে। ১৫ জুলাই রাতে সবার আগে পুলিশের গুলির কাছে বুক পেতে দিয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা। যেই সাংবাদিকদের সত্যকে ধারণ করে কলম চালিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, আজ তাদেরকেই রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে সহকর্মীকে দেওয়া হুমকির প্রতিবাদ জানাতে। এটা অত্যন্ত লজ্জার।
তিনি আরও বলেন, সময়ের আলোর সেই সাংবাদিককে বলতে চাই ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসে আপনি কীভাবে অন্য একজন পেশাদার সাংবাদিককে হুমকি দিতে পারেন। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসাথে আগামীতে যদি সাংবাদিকের উপর কোন হুমকি আসে তাহলে জাবি সাংবাদিক সমিতি কখনো কোনোভাবেই ছাড় দেবে না।
পড়ুন : জাবিতে গাছ কেটে ভবন নির্মাণে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের বাঁধা