চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) দুই ঘণ্টা আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হোসেনডাইং এলাকায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম ফিরোজ রানা। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ৯টার কিছু পরে দিকে এএসআই ফিরোজ আরও দুজনকে সঙ্গে নিয়ে হোসেনডাইং এলাকায় একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। সে সময় ওই মোটরসাইকেল চালক পালিয়ে এসে গ্রামের লোকজনকে জানান। পরে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে ফিরোজসহ তিনজনকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তবে বাকি দুজন পালিয়ে গেলেও এএসআই ফিরোজকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় প্রত্যাক্ষদর্শী ইব্রাহিম আলী জানান, গতকাল রাতে তিনজন ব্যাক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে হোসেনডাইং পাইকড়তলা এলাকায় তল্লাশি করছিল। এ সময় ছিনতাইকারী সন্দেহে স্থানীয়রা একজনকে আটক করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে সদর মডেল থানার ওসি, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসে। ওসি জনতার হাতে আটক ব্যাক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ফাঁড়িতে কর্মরত এএসআই। তার নাম ফিরোজ রানা।
ঝিলিম ইউনিয়নের সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, সাদা পোশাকে ছিলেন এএসআই ফিরোজ। স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলার পর নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেন এবং সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র দেখান। পরে খবর পেয়ে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এসে রাত সোয়া ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ইউপি সদস্য আরও বলেন, এর আগেও হোসেডাইং এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তাই স্থানীয় জনতা প্রচ- ক্ষুব্ধ ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থলে তিন শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে যায়।
স্থানীয়দের ধারণ করা ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ নাগরিক টিভির হাতে এসেছে, ভিডিওতে সদর মডেল থানার ওসি মতিউর রহমানকে তার পরিচয় নিশ্চিত করে উত্তেজিত জনতার সামনে বলতে শোনা যাচ্ছে। তাকে (ফিরোজ) ছিনতাইকারি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলো। হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা পালিয়ে গেছে তারা যেই হোক তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এটা আমার লজ্জা আমার ইউনিফর্মের লজ্জা।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এএসএম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, বুধবার রাতে ফিরোজ রানা ডিউটি অফিসার ছিলেন। ডিউটি অফিসার থাকা অবস্থায় কোনো অভিযানে যাওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও তিনি (ফিরোজ রানা) দাবি করেছে দুই সোর্স নিয়ে মাদক উদ্ধারে গিয়েছিলেন। তবে মাদক উদ্ধারে যাওয়ার আগে তার ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে জানাননি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তার (ফিরোজ) বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পড়ুন : নওগাঁয় ৪ ডাকাতসহ গ্রেফতার ৫
দেখুন : ছিনতাইয়ের অভিযোগে ২ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ |
ইম/