২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের রক্তাক্ত আন্দোলনের স্মরণে এবং জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার সকালে বরিশাল সার্কিট হাউজের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে প্রান্তজন, কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।
সমাবেশে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে পরিবেশবিদ, শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী, এবং সচেতন নাগরিকরা অংশ নিয়ে “বাঁশখালী ভুলিনি” শিরোনামে এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং জীবিকার ওপরে জীবনের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ক্যাব এর সম্পাদক রনজিৎ দত্তের সভাপতিত্বে বরিশাল পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের সদস্য জনাব শুভংকর চক্রবর্তি বলেন “এই আন্দোলন শুধু বাঁশখালীর নয়, এটি সমগ্র দেশের ভূমি ও জীবনের লড়াইয়ের প্রতীক।” “জীবাশ্ম জ্বালানি ধ্বংস কর, নবায়নযোগ্য শক্তি ক্ষমতায়ন কর” এই স্লোগানের অধীনে, কর্মী, ছাত্র এবং স্থানীয় নাগরিকরা একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উৎসে রূপান্তরের আহ্বান জানান।
আরোহির নির্বাহী পরিচালক এ টি এম খোরশেদ আলম বলেন- কয়লা ও এলএনজি প্রকল্পের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত বিপর্যয়কে নিন্দা করেন এবং জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তুলে ধরেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা এমন এক ব্যয়বহুল বোঝা, যা বাংলাদেশ আর বহন করতে পারবে না।
প্রান্তজন এর নির্বাহী পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম শাহাজাদা বলেন, “আমরা আমাদের দেশের জ্বালানির ভবিষ্যৎ মুনাফাকেন্দ্রিক স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হতে দিতে পারি না, তা না হলে বাঁশখালীর মতো ঘটনা আরো ঘটবে”। “টেকসই বাংলাদেশের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি একমাত্র কার্যকর পথ। ২০১৬ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করতে গিয়ে কৃষিজমি ও কবরস্থান রক্ষার দাবিতে যে-সব মানুষ জীবন দিয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগের স্মরণে আজকের কর্মসূচি ছিল এক প্রতিজ্ঞা— “ উন্নয়নের নামে আর যেন সাধারণ জনগণের প্রাণ না ঝরে।”

মানববন্ধন থেকে সরকার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দিতে অনুরোধ করা হয়।
আয়োজকরা নিশ্চিত করেন যে, জাতীয় জ্বালানি নীতিতে দৃশ্যমান পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এই আন্দোলন ক্রমাগত চলবে।
পড়ুন: ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনা প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা স্বাক্ষর
দেখুন: ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বিনিয়োগ বাংলাদেশে’
ইম/