১৫/০৬/২০২৫, ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ
27.9 C
Dhaka
১৫/০৬/২০২৫, ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ঝিনাইদহ ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেল ২৫ জন

ঝিনাইদহ উৎকোচ কিংবা তদবির ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ২৫ জন। অনন্য এই দৃষ্ঠান্ত সৃষ্টি করেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ প্রশাসন। সম্প্রতি জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে ২৫ জন নিয়োগ পেয়েছেন। যাদের লাগেনি কোনো বাড়তি উৎকোচ কিংবা হাইপ্রোফাইল সুপারিশ। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন যোগ্যরা। দিনমজুর, ভ্যানচালক ও মৎসজীবী পরিবারের সন্তানরা নিয়োগ পেয়েছেন নিজ নিজ যোগ্যতায়। জেলা পুলিশ প্রশাসনের স্বচ্ছ নিয়োগ প্রকিয়ার বিষয়টি নিয়ে জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ইতিবাচক আলোচনা।

বুধবার (১৪ মে) রাতে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনের কার্যালয় থেকে কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চূড়ান্ত নাম ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মনজুর মোর্শেদ। তালিকায় আরও ৫ প্রার্থীকে অপেক্ষমান হিসেবে রাখা হয়েছে। তালিকা প্রকাশের পরপরেই উত্তীর্ণ প্রার্থী ও তাদের স্বজনরা আনন্দ অশ্রুতে খুশির বহিঃপ্রকাশ ঘটান।

জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ পুলিশের কনস্টেবল পদে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয় । ওই পদে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোট ১,৭৪১ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। এরপর চলতি মাসের ৪ মে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ২৬৯ জন। তারমধ্যে ৬৯ জন উত্তীর্ণ হওয়ার পর বুধবার (১৪ মে) দিনব্যাপী মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষার পর রা্তেই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে জেলা পুলিশ প্রশাসন। ফলাফলে প্রথম স্থান অধিকার করেন ঝিনাইদহ শহরের গুলশানপাড়ার আকাশ দাস নামের এক যুবক।

এদিকে সচ্ছতার ভিত্তিতে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে মাত্র ১২০ টাকায় (আবেদন ফি) চাকরী পেয়ে আনন্দে ফেটে পড়েন অনেকেই। শহরের গুলশানপাড়ার আকাশ দাস বলেন, কোনো সুপারিশ ছিল না। ভেবেছিলাম চাকরিটা হবে না। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় সবার ওপরে আমার নাম দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বর্তমান পুলিশ প্রশাসন ও নিয়োগসংশ্লিষ্ঠ সকল কর্তৃপক্ষ এক অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ। এখন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।

মাত্র ১২০ টাকা আবেদন ফি দিয়ে চাকরি পেয়েছেন কোটচাঁদপুর উপজেলার জয়দিয়া গ্রামের অশোক হালদারের মেয়ে শিমলা হালদার। রাতের বেলা নিজের চাকরিপ্রাপ্তির খবরে আনন্দের কান্নায় ভেঙে পড়েন শিমলা ও তার স্বজনরা। শিমলার বাবা অশোক হালদার বলেন, ঘুষ কিংবা তদবির ছাড়াই আমার মেয়ের চাকরি হয়েছে। এ এক বিরাট ব্যাপার। সৎ মানুষের হাতে দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হলে এরকম পরিবর্তন আসবে। আমার পরিবারে আজ খুশির আমেজ। পুলিশ সুপার মহোদয় সহ সবার প্রতি আমার আশির্বাদ।

জেলা পুলিশ সুপার মো. মনজুর মোর্শেদ বলেন, সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মেধাবী ও যোগ্যদের মুল্যায়ন করা হয়েছে। যোগ্যরাই তিন ধাপের পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন। আমরা যোগ্যদের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার কাজ করেছি মাত্র।

উত্তীর্ণদের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকের মাঝে ধারণা আছে পুলিশে চাকরি মানেই ঘুষ ও তদবিরের জোর লাগে। কিন্তু আমরা সেই ধারণা পাল্টে দিতে চাই। জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও ন্যায়সঙ্গত উপায়ে নতুন করে দেশ গড়তে হবে। এই কাজে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।

পড়ুন: ঝিনাইদহ সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৫৮ জন আটক

দেখুন: ঝিনাইদহের ‘ভাইরাল গেটম্যান’ সুমি একাই একশ 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন